পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র, ১৩১৯ ৷৷ রাধারণী । br○や গ্রামের দশজন উপেক্ষা করিবে না। তাহার পিতা গ্রামের লোকের কি না করিয়াছিলেন ? গ্রামে যখনই যাহার বিপদ উপস্থিত হইয়াছে, তাহার পিতা তখনই তাহার উদ্ধারার্থ চেষ্টা করিয়াছেন। আর আজ তাহারা কি সেই সকল উপকারের কথা এত শীঘ্র বিস্মৃতি হইয়া যাইবে ? সেই উজ্জল আলোক কি অমাবস্যার গাঢ় অন্ধকারে পরিণত হইবে ? সন্ধ্যায় যখন পল্লীখনি নিতান্ত নিস্তব্ধভাবে ধারণ করিত, তখন রাধারাণী তাহার রুদ্ধা ঠাকুমা’র অস্থিকঠোর বুকে আপনার মুখখানি রক্ষা করিয়া নিতান্ত অধীরভাবে এই সকল কথা কহিত । আর বৃদ্ধ একটা একটা করিয়া দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিতেন-কদাচিৎ বা তাহার সন্তোষ উৎপাদন জন্য ‘হঁ” কথাটি মাত্র উচ্চারণ করিতেন । এইরূপ নানা কথার পর সে ঘুমাইয়া পড়িত। আর বৃদ্ধ অনন্ত শুন্য হৃদয় লইয়া শয্যায় ছটফট করিতেন । এই রূপে তাতাদের দুঃখের দিনগুলি চলিয়া সইতে লাগিল । ( 8 . বাঞ্ছারাম ঘোষ রাধারণীর পিতার জীবিত কালে তাহদের বা প্লীতে কৃষাণের কার্য্য করিত । গ্রামে যখন ম্যালেরিয়া জ্বরের লেলিহান শিখা গৃহে গৃহে ফিরিতেছিল, বাঞ্ছারাম তখন কলিকাতায় পলাইয়া গিয়া বড় বাজারের একটা দোকানে কার্য্যে নিযুক্ত হইয়াছিল । দেড় বৎসরপরে যখন ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কম হইয়া আসিল, বাঞ্ছারাম তখন গ্রামে ফিরিয়া আসিল এবং তাহার অবস্থাপরিবর্তনের জন্য নানা প্রকার ফন্দী আবিষ্কার করিতে লাগিল। বাঞ্ছারামের দীর্ঘ বলিষ্ঠ দেহ, বৃহৎ মস্তক, রক্তবর্ণ চক্ষু প্রভৃতি দেখিয়া রাধারণী শৈশব হইতেই তাহাকে ভয় করিত। এখন কলিকাতায় থাকিয় তাহার দেহ আরও স্ফীত হইয়াছে ; আর তাহার কৃষ্ণপর্ণের উপর বার্নিসের ন্যায় একটা জ্যোতি দেখিয়া রাধারণীর পূর্বভয় যেন দ্বিগুণ বদ্ধিত হইল। বাঞ্ছারাম বাড়ী আসিয়াই নায়েবের সঙ্গে যোগ করিয়া রাধারাণীর ৫০ বিঘা উৎকৃষ্ট জোতজমী বন্দোবস্ত করিয়া লইল । নায়েব জমীদারিকে বুঝাইয়া দিল, রাধারাণী বালিকা, তাহার ঠাকুরমা বৃদ্ধ -- তাহারা এ জোত রক্ষা করিতে পরিবে না; খাজনার টাকার অভাবে এক দিন নীলামে চড়িবে। - তাহারও অনর্থক ব্যয়বৃদ্ধি। জমীদার নগদ নজরের টাকা ও খাজনাবৃদ্ধি পাইয়া বাঞ্ছারামকে উৎকৃষ্ট ৫০ বিঘা জোত বন্দোবস্ত করিয়া দিলেন। রাধারণীর ঠাকুরমা ও রাধারাণী এ কথা শ্রবণ করিল, কিন্তু তাহাতে