পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১২ আর্য্যাবর্তী। -- ৩য় বর্ষ-২য় সংখ্যা । প্রবাদ-প্রসঙ্গ । আমরা অনেক সময় কথোপকথনের মধ্যেই প্রয়োজন অনুসারে প্রবাদবচনের উল্লেখ করিয়া থাকি। প্রবাদগুলিতে উদ্দেশ্যানুরূপ কার্য্য সিদ্ধ হইয়া থাকে বটে ; কিন্তু প্রবাদের ব্যবহারক। তাহার ইতিহাস সকল সময়ে অবগত থাকেন না। কোন প্রবাদ কি প্রকারে, কোন ঘটনা অবলম্বন করিয়া উৎপন্ন হইয়াছে তাহা তাহার জানা থাকে না। অনেক দিনের কথা পাদরী মিষ্টার লঙ্গ (Long) প্রবাদ সংগ্রহ করিয়া একখানি পুস্তক প্রকাশ করেন। তাহার পর দ্বারকানাথ বসু ‘প্রবাদমালা’ প্রকাশ করেন। অতঃপর ‘ভারতী’ নামক পত্রিকায় শ্রীযুক্ত শৈলেশচন্দ্র মজুমদারপ্রমুখ লেখকগণ বাঙ্গালা প্রবাদ সম্বন্ধে কিছু কিছু আলোচনা করিয়াছেন। ইহা ভিন্ন প্রবাদ সম্বন্ধে আর কাহারও বিবরণ কোথাও প্রকাশিত হইয়াছে বলিয়া আমার জানা নাই।” আমার মনে হয়, প্রবাদগুলি যেমন প্রয়োজনীয় তাহাদিগের বিবরণও সেইরূপ। বিষয়ের আবশ্যকতা ও গুরুত্বের উপর লক্ষ্য রাখিয়া বর্ত্তমান প্রবন্ধের অবতারণা করা श्व्न। ( ১ ) “লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন” । কলিকাতার বিখ্যাত প্রাচীন অধিবাসীদিগের মধ্যে বৈষ্ণবচরণ সেঠ সর্বাপেক্ষা পুরাতন লোক ছিলেন । প্রায় এক শত বৎসর পূর্বে বড়বাজারে তঁহার বাসস্থান ছিল। র্তাহার সময়ে যে সমস্ত লোক ব্যবসা বাণিজ্য করিতেন। তঁহাদিগের মধ্যে বৈষ্ণব বাবু একজন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ এবং ধনী ব্যক্তি ছিলেন। র্তাহার ন্যায়পরতা সম্বন্ধে অনেক গল্প আছে । তেলিঙ্গানার রাজকুমার রামরাজা কলিকাতা হইতে তাহার দেবারাধনার জন্য গঙ্গাজল লইয়া যাইতেন । কিন্তু সেই গঙ্গাজল। বৈষ্ণবচরণের মোহরাঙ্কিত না হইলে তিনি ব্যবহার করিতেন না। একদা বৈষ্ণবচরণ গৌরী সেন নামক তাহার অংশীদারের নামে প্রচুর রাঙতা ক্রয় করিয়াছিলেন। পরে দেখা গেল, সেই রাঙা তার অধিকাংশই রৌপ্যমিশ্রিত । বৈষ্ণবচরণ এই রাঙতার কারবারে যাহা লাভ হইল তাহার একপয়সাও গ্রহণ করিলেন না। তিনি বলিলেন, যখন জিনিষ, গৌরী সেনের নামে ক্রীত হইয়াছে তখন তাহার লাভের অংশ অবশ্যই গৌরী সেনের প্রাপ্য হইবে। গৌরী

  • “ৰামাবোধিনা" পত্রিকায়ও প্রবাদ-সংগ্রহ প্রকাশিত হইয়াছিল -সম্পাদক