পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ়, ১৩১৯ ৷৷ পুরাতন প্রসঙ্গ । . YG . ছেন, তিনি বিদ্যাসুন্দরের অশ্লীল অংশ পড়াইতে সঙ্কুচিত হইয়াছিলেন, কিন্তু তঁাহার ছাত্র তাহাকে সে বিষয়ে অভয় দান করেন । “বেতাল পঞ্চবিংশতি’ বাহির হইবার পূর্বে বাঙ্গলা ‘পুরুষপরীক্ষা’ ও ‘প্রবোধচন্দ্রিক।” নামক দুইখানি পুস্তক প্রচলিত ছিল। সিভিলিয়নরা জাহাই পাঠ করিত। এখনকার রীতি অনুসারে ঐ দুইখানি গ্রন্থ পছন্দ হইবার কথা নহে। সেই জন্যই বিদ্যাসাগর ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি” রচনা করেন। “পুরুষ পরীক্ষা” গ্রন্থের মধ্যে একটি সন্দর্ভ লইয়া পুর্বে খুব হাস্যপরিহাস চলিত । এই সন্দর্ভের মধ্যে লিখা আছে যে, বুদ্ধি চারি প্রকার,-বেগবেগা, বেগচিরা, চিরবেগা, চিরচিরা। বেগবেগার অর্থ যে শীঘ্র বুঝিতে পারে, অথচ শীঘ্রই ভুলিয়া যায় ; বেগচিরা-শীঘ্র বুঝে অনেক দিন মনে রাখে ; চিরবেগ-বুঝিতে দেরী হয়। অথচ শীঘ্র ভুলিয়া যায় ; চিরচিরা বুঝিতে দেরী হয়, কিন্তু অনেক কাল মনে থাকে। এই ‘চিরচিরা” লইয়া লোক বিস্তর আমোদ করিত। যাহা হউক সে গ্রন্থ দুইখানি একেবারে লুপ্ত হওয়া ভাল নহে ; কারণ, বিদ্যাসাগরের প্রবর্ত্তিত রীতির পুর্বে কি প্রকার রীতি প্রচলিত ছিল, বিশেষতঃ ডেপো পণ্ডিতদিগের মধ্যে, তাহার অতি সুন্দর নমুনা ঐ দুই গ্রন্থে দেখিতে পাওয়া যায়। ঐ গ্রন্থ পড়াইবার সময় বিদ্যাসাগর বোধ হয়। হাড়ে চটিয়া যাইতেন ; বোধ হয় তাহার শয্যাকণ্টক বোধ হইত, তাই তিনি অতি উৎসাহের সহিত “বেতাল পঞ্চবিংশতি’ রচনা করেন। “বেতাল পচিশি’ নামে যে হিন্দি বহি আছে, বিদ্যাসাগরের গ্রন্থখানি উহার নামমাত্র অনুবাদ । হিন্দিতে তিনি কেবল কঙ্কালখানি পাইয়াছিলেন; রক্ত, মাংস, চর্ম্ম ইত্যাদি সকলেই তিনি আপনা হইতে যোজনা করিয়া দিয়াছেন । তাই বাঙ্গালায় অমান পরম সুন্দর একখানি গ্রন্থ প্রস্তুত হইয়াছে । “১৮৪৬ খষ্টাব্দে ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি” বোধ হয় প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৮৫০ খৃষ্টাব্দে মদনমোহন ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট হইয়া মুর্শিদাবাদে যায়েন। আমি তখন, বোধ হয়, দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণের ক্লাসে পড়ি। রামকমল সেনের বাড়ীর উপরের এক হলের ভিতর মদনমোহন তর্কালঙ্কারের ক্লাস, প্রেমচান্দ তর্কবাগীশের ক্লাস ও দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণের ক্লাস বসিত। ১৮৫০ হইতে মদনমোহনের সহিত বিদ্যাসাগরের উৎকট মনোমালিন্য কেন জন্মিল, কেন বিদ্যাসাগর তর্কালঙ্কারের সহিত সমস্ত সম্পর্ক জোর করিয়া