পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sao আর্য্যাবর্ত্ত । ৩য় বর্ষ-- ৩য় সংখ্যা । ক্ষণিক সুখ । বহুদিন পরে আজ আবার সমুদ্রতীরে আসিয়া বসিয়াছি। কত দিনের) কত বৎসরের ৰিচ্ছেদের পর আজ পুনর্ম্মিলনের তীব্র আকাজক্ষা পরিতৃপ্ত করিতেছি । সমুদ্রের সহিত যত প্রেম, বুঝি মানুষের সহিত তত প্রেম হয় না ; সে প্রেম নিস্বার্থ সুতরাং নিরঙ্কুশ । দুরে সমুদ্র এবং আকাশের সন্ধিস্থল ভেদ করিয়া সুবিমল শশধর পৌর্ণমাসী রজনীর মৃদু মধুর হাস্যে দিগন্ত উদ্ভাসিত করিয়া ধীরে ধীরে উচ্চ হইতে উচ্চতর গগনে আরোহণ করিতেছেন। স্নিগ্ধ কিরণরেখা তির্য্যকৃ ভাবে সমুদ্রবক্ষে পতিত হইয়া সততচঞ্চল উর্ম্মিমালার নীলাভঙ্গী চিত্তবিমোহন করিয়া তুলিয়াছে। যেন তরল রাজতরাশি চল চল ছল ছল করিয়া হেলিয়া দুলিয়া, হাসিয়া নাচিয়া, পরস্পরের অঙ্গে অঙ্গ মিশাইয়া মিলনের মধুর রসাস্বাদন করিতে করিতে অনন্তের অনন্ত অন্তরে আত্ম মিলাইতে ছুটিয়াছে। পূর্ণ চন্দ্রের পূর্ণ প্রতিবিম্ব হৃদয়ে ধরিয়া, তাহাকে কঁপাইয়া কঁপাইয়া সমুদ্র তাহার প্রণয়াস্পদের আসঙ্গজনিত হৃদিকম্পন বিজ্ঞাপন করিতেছে। আনন্দে আত্মহারা সমুদ্রের সরাম নাই, শঙ্কা নাই, আত্মগোপনের চেষ্টামাত্র নাই। তাহার আনন্দ যে ক্ষণস্থায়ী, তাহার সে চিন্তা নাই। পুর্ণিমার পর যে অমাবস্যা, সে কথা সে ভুলিয়া গিয়াছে; তাই সে হৃদয়ের শশীকে নাচাইয়া দোলাইয়া নিলাজ ভাবে সোহাগ জানাইতেছে। তাহার উচ্ছঙ্খল আনন্দ দেখিয়া যে অপরের ঈর্ষ্যা জন্মিতে পারে, সে কথা তখন তাহার কল্পনায়ও স্থান পাইতেছে না । কিন্তু সমুদ্র, তোমার এ শশীসোহাগ। কতক্ষণ ? যতক্ষণ রজনী না প্রভাত হয় । তাহার পর, তোমার হৃদয়ে অন্যের ছবি অঙ্কিত হইবে । তাহার তেজ বড় তীব্র। তখন তোমার এ মৃদু মধুর ভাব থাকিবে না ; তখন তোমার এ শ্রান্তিহরা পাগলকর শ্রীকৃতিসুখকর মন্দ গৰ্জন থাকিবে না । এমন ক্ষুদ্র বীচিমালার লীলাময় নৃত্য থাকিবে না ; তখন প্রচণ্ড সুর্য্যের প্রখর কিরণে তোমার হৃদয়-সাহারা উত্তপ্ত ধূসর ভাব ধারণ করিবে। উষ্ণ নিশ্বাসে উচ্চ, তরঙ্গে তোমার বক্ষ বিদীর্ণ হুইবে । তখন তোমার বিস্তুত হৃদয়ের প্রতি