পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/২০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ়, ১৩১৯ ৷৷ জীবন-বৈচিত্র্য .Sסף ৰলিয়াছিলেন, “নিষ্ঠুরতা অনেক ক্ষতি করিতে পারে, এমন কি আমার জীবন পর্য্যন্ত নষ্ট করিতে পারে ; কিন্তু আমার প্রেমের কিছুই করিতে পরিবে না।” যে দেশে সীতা ও দময়ন্তী এখনও সর্বত্র পূজিতা সে দেশে প্রেমের নিরপেক্ষতার আর কি দৃষ্টান্ত দিব ? প্রেম একবার হৃদয়ে বদ্ধমূল হইলে বিচ্ছেদও তাহার কোনও ক্ষতি করিতে পারে না, বরং বিচ্ছেদে প্রেম সমধিক বৃদ্ধিলাভ করে। একজন প্রেমিক কবি বলেন “সঙ্গম বিরহ বিকল্পে বীরমিহবিরহোন সঙ্গমস্তস্যাঃ । সঙ্গে সৈব যাদেক ত্রিভুবনমপি তন্ময়ং বিরহে ॥” প্রণয়িনীর সহিত সঙ্গমাপেক্ষা বিচ্ছেদ শ্রেয়ঃ ; কারণ সঙ্গমে সে একাই থাকে, কিন্তু বিরহে সে সমস্ত ত্রিভুবন জুড়িয়া থাকে। কিন্তু সদ্যোজাত প্রেমান্ধুর “বিচ্ছেদছাগে মুড়িয়ে খায়।” উহাকে অতি যত্ন পূর্বক রক্ষা না করিলে উহ্য অকালে লয় প্রাপ্ত হয়। এইজন্য কবি উপদেশ (际可一 “মনো ভূমৌ জাত প্রকৃতিচপলায়াং বিধিবশাৎ সথে সম্যকশ্বৰ্দ্ধ্যা প্রচুরগুণপুষ্পপ্রসবিনী। তথা সংসেক্তব্য স্মরণসলিলে নানুদিবসং যথা নেয়ং মানিং ব্রজতি মৃদুল মেহলতিকা ৷” সখে! স্বভাবতঃ চঞ্চল মনোরূপ ভূমিতে যদি দৈবযোগে একটি প্রচুরগুণপুষ্পপ্রসবিনী কোমলা স্নেহলতিকা জন্মিয়াছে তবে উহা যাহাতে সম্যক বৃদ্ধি লাভ করে তাহার চেষ্টা করা উচিত ; উহা যাহাতে শুকাইয়া না যায় উহার মূলে অনুদিন তদনুরূপ স্মরণসলিলসেক করিতে হইবে। সূর্য্য যেমন জগতের তিমির ধবংস করিয়া নানাবিধ সৌন্দর্য্য উদ্ভাবন করে। সেইরূপ প্রেম-সুর্য্যের উদয়ে মনের সমস্ত নীচতা ও মলিনতা দূর হয় এবং নানাপ্রকার উন্নত ও মহৎ ভাবের আবির্ভাব হয়। সমুদ্র যেমন পৃথিবীকে আলিঙ্গন করিয়া উহার যাহা কিছু নীচ ও অসার তাহা বিদূরিত করে, প্রেমের স্পর্শে মানব-হৃদয়েরও ঠিক সেইরূপ ঘটে। কবিগুরু দান্তেকে সমস্ত জীবন অশেষ নির্য্যাতন সহা করিতে হইয়াছিল, কিন্তু তিনি তথাপি বলিতেন, “যখন আমার প্রণয়িনী বিয়াট্রিসকে দেখি, তখন আমার মনে হয় যে, সমগ্র পৃথিবীতে আমার কোনও শক্র নাই।”