পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ, ১৩১৯ । ਲੋ-5 २१. সেই দিন আহারান্তে শয়নগৃহে প্রবেশ করিয়া বিরজা দেখিল, ব্রজেন্দ্র তখনও সে কক্ষে আইসে নাই । কক্ষমধ্যে উত্তাপাতিশয্যে সে একখানি মাদুর লইয়া সম্মুখে মুক্ত ছাতে গেল-তথায় মাদুরখানি বিছাইয়া তাহাতে শ্রান্ত দেহ ঢালিয়া দিল। বৈশাখ মাস। দিবাভাগে রৌদ্রতাপে তপ্ত নগরীর বায়ু যেন অগ্নির মত বোধ হয়। সন্ধ্যার পর গৃহাদি সঞ্চিত তাপ বিকীর্ণ করিতে থাকে। কেবল যে দিন “কাল বৈশাখী’র কাল মেঘ পশ্চিম গগনে দিনান্তশোভা মুছিয়া প্রকৃতির মুখ অন্ধকার করিয়া দেয়—প্রবল পবন ধূলির ধ্বজা উড়াইয়া অট্টহাস্তে বহিয়া যায়—বিদ্যুদালোকবিচ্ছিন্ন মেঘের হৃদয় হইতে বারি ঝরিয়া দীর্ণ ধরাবক্ষে পতিত হয় সে দিন সন্ধ্যার পর ধৌত ধূলি জলকণসঙ্গশীতল সমীরণের স্পর্শ সুখদ বোধ হয়। পুর্বদিন অপরাহে আকাশে মেঘ দেখা দিয়াছিল বটে, কিন্তু পরুষ পবনে মেঘমালা স্থির থাকিতে পারে নাই-বারিবর্ষণ হয় নাই। আজ আকাশের প্রান্তে প্রান্তে কেবল মেঘের আভাস-লঘু মেঘে শীর্ণ বিদ্যুতের বিকাশ রোগীর শীর্ণ অধরে হাসির মত দেখাইতেছে ; গগনমধ্যভাগে মেঘলেশ নাই-সহস্র তারকার দীপ্ত দীপ্তি । এতক্ষণ বাতাস যেন নিশ্চল ছিল। ক্রমে ধরাতালোখিত-গৃহাদি-বিকীর্ণ তাপ সরাইয়া দিয়া নৈশ পবন প্রবাহিত হইল ;-তাহার স্পর্শে বিরজার বসন প্রকম্পিত হইতে লাগিল। এ দিকে খণ্ড শশী চক্রবাল হইতে উঠিয়া মধ্যগগনে উপনীত হইল । তাপতপ্ত দীর্ঘ দিবসের পর স্নিগ্ধ পবনের সুখদম্পর্শে বিরজার নিদ্রাকর্ষণ হইল । ততক্ষণে ব্রজেন্দ্র শয়নকক্ষে আসিয়া উপস্থিত হইল। শয্যায়। পত্নীকে দেখিতে না পাইয়া সে কক্ষদ্বারে আসিয়া দেখিল, মুক্ত ছাতে মাদুর বিছাইয়া বিরজা ঘুমাইয়া পড়িয়াছে। সে নিঃশব্দপদসঞ্চারে আসিয়া পত্নীর পার্থে দাড়াইল-মুগ্ধনেত্রে পত্নীর জ্যোৎস্নালোকে উদ্ভাসিত সৌন্দর্য্য দেখিতে লাগিল। সে মুখে কি স্নিগ্ধ প্রফুল্প ভাব! নয়নযুগল মুদিত, যেন অসীম । সৌন্দর্য্য ও সৌরভ লইয়া কমল-কোরক দিবালোকবিকাশে ফুটিয়া উঠিবায়’’’ জন্য অপেক্ষা করিতেছে! কয়গাছি চুর্ণ কুন্তল কবরীবন্ধন মুক্ত হইয়া কপালে আসিয়াছে-কেহ স্বেদজড়িত হইয়া কপালে বন্ধ-কেহ পবন হিচেন্নালে বিকম্পিত। ব্রজেন্দ্র মুণ্ডনেস্ত্রে পত্নীকে দেখিল, তাহার পর ধীরে ধীরে পঞ্জীর পার্থে বসিল ; তাহার পর ধীরে ধীরে পত্নীর অধর চুম্বন করিল। সুখসুপ্ত। পত্নীকে জাগাইবার ইচ্ছা ব্রজেন্দ্রের ছিল না। কিন্তু বিরজাস্বামীর আগমন