পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ, ১৩১৯ । মির্জানগরের ধ্বংসাবশেষ । evo কোনও মুসলমান যে এক সময়ে অবস্থান করিতেন, ইহা অনুমান করা। বোধ হয় অসঙ্গত হইবে না। নবাববাড়ীর অৰ্দ্ধক্রোশ দূরে একটি দুর্গের ধ্বংসাবশিষ্ট অংশবিশেষ দর্শকের দৃষ্টি আকৃষ্ট করিয়া থাকে। চতুর্দিকস্থ গ্রামের লোক ইহাকে “কিল্লাবাড়ী” আখ্যা প্রদান করিয়াছে। এই দুর্গ উচ্চে আট বা দশ ফিন্টু, এবং পরিধিতে নৃত্যুনাধিক এক ক্রোশ হইবে। ইহার দক্ষিণদিকে “মোতিবিল” নামে যে একটি জলাশয় আছে, সেই জলাশয় হইতে মৃত্তিক উত্তোলিত করিয়া এই দুর্গ সংগঠিত হইয়াছিল। প্রবাদ “কিল্লাবাড়ী” পুর্বে প্রাকারে পরিবেষ্টিত ছিল ; কিন্তু এখন তাহার চিহ্নমাত্র বর্তমান নাই । দুৰ্গে প্রবেশ করিবার প্রধান দ্বার পূর্বদিকে ; দেখিলে বোধ হয় যেন এই দ্বার পূর্বে কোনও সময়ে বিশেষ সুরক্ষিত ছিল। শুনিতে পাওয়া যায়, বহুদিন পূর্বে এই স্থানে তিনটি কামান পড়িয়াছিল। ১৮৫৪ খষ্টাব্দে যশোহরের তদানীন্তন মাজিষ্ট্রেটু মিঃ বোফোর্ট ( Beaufort ) তাহদের দুইটিকে স্থানান্তরিত করেন। তৃতীয়টি এখনও নিকবর্ত্তী মাঠে পতিত রহিয়াছে। ইহা একটি আশ্চর্য্য জিনিষ। সার জেমস ওয়েষ্ট ল্যাণ্ড তাহার প্রসিদ্ধ পুস্তক—যশোহর জিলার রিপোটে এই কামান সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছেন তাহরে কিয়দংশ নিয়ে উদ্ধত হইল ঃ “There is, according to the natives, some magic power in it which makes it refuse to be moved. Three hundred convicts and one elephant were at one time tried, but failed to raise it from its place. . . . . . It is an iron gun, about five feet long, and composed of three or four concentric layers of metal." দুৰ্গে প্রবেশদ্বারের সংলগ্ন ভূমিখণ্ডে ইষ্টকনির্ম্মিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অন্ধকার কক্ষশ্রেণী দৃষ্ট হয়। গ্রাম্যলোক এই স্থানটিকে কয়েদীখানা বলিয়া নির্দেশ করিয়া থাকে । এই সকল কক্ষের দুইটিতে কয়েকটি সঙ্কীর্ণ কুপ আছে। হতভাগ্য অপরাধীরা মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হইবার নিমিত্ত এই সকল কুপে নিক্ষিপ্ত হইত। যাহাতে তাহারা কোনও প্রকারে কুপ হইতে উখিত হইয়া পলায়ন করিতে না পারে, সেই জন্য কুপের উপরিভাগস্থ রন্ধ চুন ও বালি দিয়া বন্ধ করা হইত। -