পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (দ্বিতীয় বর্ষ - দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফান্ডন, ১৩১৮ । “পিক্‌নিকৃ”। ৮৪৫ “দেখ, আজকের গতিক ভাল নয় । এখানে কোন প্রেতিযোনির বাস আছে রাত্রিতে এখানে আহারের আয়োজন করা ভাল হয় নি ।” দিবালোকে প্রেতকে অবাধে উপেক্ষা করা যায়। কিন্তু রাত্রির অন্ধকারে, বিশেষতঃ মেঘ ও বর্ষার দিনে কথাটা কিছু গুরুতর হইয়া উঠে। সুতরাং মুখে পরিহাস করিলেও সকলেরই , হৃদয়তন্ত্রী অজ্ঞাতে যেন একটু কঁপিয়া উঠিল। যখন রন্ধন সমাপ্ত হল তখন চারিদিক “সুচিভেদ্য” অন্ধকারে পরিব্যাপ্ত; টিপিটপি বৃষ্টি পড়িতেছে ; থাকিয়া থাকিয়া মৃদু মৃদু মেঘগৰ্জনের সঙ্গে তুষার শীতল আর্ক্সবায়ু হুঙ্কার করিয়া উঠিতেছে। অন্ধকারেই “পাত” হইল। অনেক চেষ্টায় একখণ্ড কাষ্ঠীকে মশালে পরিণত করিয়া মধ্যস্থলে রাখা হইল। ভোজন আরব্ধ হইল। প্রথমেই তারকারী ও পলান্ন পঢ়িল। পোলা ও মুখে দিয়া ন-বাবু বলিলেন, “আরে ছ্যাঃ চালগুলো অৰ্দ্ধেক কঁাচা রয়ে গেছে ! দূর হোকগে মাংসটা বের কর।” পাচক আসিয়া পাতে মাংস দিয়া গেল। মাংস মুখে দিয়াই ফ-বাবুর মুখমণ্ডল ভয়ে পাণ্ডুবর্ণ হইয়া গেল। ভীতিকম্পিত কণ্ঠে ফ-বাবু বলিলেন, “ভাই যা ভয় ক’রেছিলুম। তাই ! একেবারে tasteless, কে যেন চিবিয়ে সমস্ত রসাটুকু শুষে নিয়োচে!” শুনিয়া সকলেরই বক্ষ দুরু দুরু করিয়া কঁাপিয়া উঠিল। ন-বাৰু পাচককে বলিলেন, “ঠাকুর একবার আলোটা দেখা ও তাঁ।” কি আশ্চর্য্য! আলোকের সাহায্যে সকলেই সুস্পষ্ট দেখিলেন, সমস্ত মাংসই যেন চর্ব্বিতাবিশেষ ! কম্পিত্যুবক্ষে সকলেই নীরবে পরস্পরের মুখাবলোকন করিতে লাগিলেন । "・ এমন সময় সহসা বিদ্যুতের তীক্ষ্ম দীপ্তি নৈশ অন্ধকার ছিন্ন ভিন্ন করিয়া কাদম্বিনী বক্ষে ঝলসিয়া উঠিল। সঙ্গে সঙ্গে প্রবল বায়ু আসিয়া ক্ষীণ আলোকটিকেও নির্বাপিত করিয়া দিল। সেই নিবিড় অন্ধকারে অনুনাসিক সুরে কে বলিল, “সেলাম বাৰু লোেগ।” বারুদের স্তুপে যেন অগ্নিস্ফুলিঙ্গ পড়িল। “ওরে বাবারে” বলিয়া যে যে দিকে পারিল প্রাণপণে ছুটিয়া পলাইল! হতবুদ্ধি পাচক ও মাংসের কটাহ মাটিতে ফেলিয়া বাবুদের অনুসরণ করিল। কেবল ধীরবুদ্ধি ডাক্তার বাৰু এই দারুণ দুর্য্যোগেও মস্তিষ্ক স্থির রাখিয়া উলুপ্ত ‘‘চপে” পকেট দুইটি পূর্ণ করিয়া ধীরে ধীরে নিকটবর্ত্তী দোকানের দিকে অগ্রসর হইলেন। ইতিঃপূর্বেই তিনি একবার ভ্রমণে বাহির হইয়া দোকানদারের সঙ্গে আলাপ কৰিয়া আসিয়াছিলেন। ,