পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (দ্বিতীয় বর্ষ - দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র, ১৩১৮ । যুরোপ-ভ্রমণ । እSSዓ ঠিক মধ্যস্থলে একটি অপেক্ষাকৃত উচ্চ চওড়া পাতর আছে। ক্ষুদ্র নৌকায় প্রাণ হাতে করিয়া সেই প্রপাতের ভিতর দিয়া তাহার উপর উঠিয়া তথায় চা-পান করা একটা অবশ্যকর্ত্তব্য কার্য্য। বাতাসে জলের কণা রোনুর ন্যায় অঙ্গে পড়ে, কাযেই তথায় যাইতে হইলে ওয়াটারপ্রািফ গাত্রে দিয়া যাইতে হয়। গ্রীষ্মকালে চতুৰ্দিক আলোকমালায় সুসজ্জিত করে, তখন নিশ্চয়ই বড় সুন্দর দেখিতে হয় ; আমি শীতকালে গিয়াছিলাম, সে সব কিছু দেখি নাই। এই নয়হাউসেনে বড় কৌতুক হইয়াছিল। বলা উচিত যে, সুইটজারল্যাণ্ডে সর্বত্রই হোটেল, অন্য দেশবাসীরা বলেন সুইটজারল্যাণ্ড না বলিয়া হোটেলল্যাণ্ড বলা উচিত এবং ইহার জাতীয় বীরের নাম William Tell (উইলিয়ম টেল ) না হইয়া উইলিয়ম হোটেল হওয়া উচিত। সে যাহা হউক বড় বড় কয়েকটি স্থান ভিন্ন অন্যত্র নিদিষ্ট সময় (Season) আছে । বৎসরের মধ্যে সেই কয় মাস এই সব স্থান আমোদ আহলাদে ও যাত্রীদের কলহান্যে মুখরিত, অন্য সময়ে প্রায় সমস্ত হোটেলই বন্ধ থাকে, এক আধটা যাহাও বা খোলা থাকে, সে সকলে দাসদাসীর একান্ত অভাব। আমি যখন নয়হাউসেনে পৌছিলাম তখন সে স্থানের Season শেষ হইয়া গিয়াছে। যে হোটেলে যাইলাম তথায় অন্য অতিথি কেহই ছিলেন না, কর্তৃপক্ষের মধ্যে দুইজন রমণী ও একটি দাসী ; তঁাহারা কেহই ইংরাজি জানিতেন না, আমারও ইংরাজি ভিন্ন অন্য যুরোপীয় ভাষা জানা নাই। কাযেই কথাবার্ত্তা আকার ইঙ্গিতেই চলিল, যখন ভাষার নিতান্ত দরকার তখন বাঙ্গালা ব্যবহার করিতে লাগিলাম, কারণ র্তাহাদের পক্ষে ইংরাজি ও বাঙ্গালী দুইই সমান। শ্রোত্রীবর্গ হাসিয়া কুট পাট । আমার জানিবার প্রয়োজন হইল যে, ভারতবর্ষের ডাক কবে যায়। ইহা ত আর ইঙ্গিতে বুঝান যায় না! কাগজে লিখিয়া অনেক কষ্টে একজনকে বুঝাইলাম যে, কাগজখানা ডাক ঘরে পাঠান প্রয়োজন। দেড় ঘণ্টা পরে অনেক চেষ্টার পর পোষ্ট-মাষ্টার একজন ইংরাজিনবিশকে বাহির করিয়া আমার চিঠি পড়াইয়া জবাব লিখাইয়া দিলেন । এ ভোগ আর কোথায়ও ভুগিতে হয় নাই। অন্য সব স্থানেই ইংরাজিজানা লোক হোটেলে পাইয়াছিলাম । পরদিন বৈকালে লুসার্ণ যাত্রা করিলাম। সুইটজারল্যাণ্ডে কোনও মাল বিনা মাতলে রেলে লইতে দেয় না । ছোট হাণ্ডব্যাগেরও মাশুল দিতে হয়। অন্য দেশের তুলনায় মাশুলও খুব বেশী।