পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (দ্বিতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাস্তায় কেবলমাত্র দুই একটা কুকুর বিচরণ করিতেছিল এবং জনকয়েক মজুর। তাহদের দৈনিক কার্য্যারম্ভের উদেশে আপনি আপন কর্ম্মস্থলে যাইতেছিল। বন্দরে তটনিবন্ধ নৌকাগুলির ঈষৎ আন্দোলন এবং স্থিরপ্রায় জলরাশির মৃদুমন্দ কল্লোলধবনি শুনা যাইতেছিল । মধ্যে মধ্যে নৌকার সহিত হালের সংঘর্ষণের শব্দ ও রজ্জ্বতে টান পড়ায় রাশারীশির বিচিত্র কঁ্যাচার্কোচ শব্দ শুনা যাইতেছিল। বন্দরস্থ পোতশ্রেণী, প্রস্তরাচ্ছাদিত সমুদ্রতট এমন কি চির-বিক্ষুব্ধ মহাসিন্ধুও যেন সেই সুবর্ণখচিত আকাশের তলে ঘুমাইতেছে, বলিয়া বোধ হইল। জেটীর প্রান্তভাগে একটি ক্ষুদ্রায়তন আলোকস্তম্ভ ; যেন সতর্ক প্রহরীর ন্যায় এই ক্ষুদ্র বন্দরটির রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত । কিয়দূরে অদূরীনের পোত-নির্ম্মাণের কারখানার সন্নিকটে ব্যস্ততার চিকু পরিলক্ষিত হইল। আমি দূর হইতে একটি স্থিমিতপ্রায় আলোক দেখিতে পাইলাম ও কথাবার্ত্তার শব্দ শুনিতে পাইলাম ; বুঝিতে পারিলাম, তাহারা আমার জন্য অপেক্ষা করিতেছে। আমার ক্ষুদ্র অর্ণবপোত “বেলামী’ যাত্রার জন্য প্রস্তুত ছিল। আমি পোতকক্ষে প্রবেশ করিলাম। ভিতরে দুইটি বর্ত্তিকা জ্বলিতেছিল। দোদুল্যমান বর্ত্তিকাধার এরূপ কৌশলের সহিত রক্ষিত হইয়াছে যে, জাহাজ আন্দোলিত হইলেও সহসা কেন্দ্রচু্যত হয় না। আমি নাবিকগণের চর্ম্মনির্ম্মিত অঙ্গরাখা পরিধানান্তর একটি গরম টুপিতে মস্তক আবৃত করিয়া পাটাতনের উপর ফিরিয়া আসিলাম । জাহাজের দড়িদড় ইতোমধ্যে খুলিয়া দেওয়া হইয়াছিল এবং দুইজন নাবিক নোঙ্গর উত্তোলনে * নিযুক্ত ছিল। তাহার পর তাহারা দড়িদড় টানাটানি করিয়া কপিকলে একঘেয়ে শব্দ করিয়া জাহাজের প্রকাণ্ড পাইলটি তুলিয়া দিল। এই ঈষৎ কম্পমান বস্ত্রখণ্ডের পাণ্ডুর বিস্তৃতি সমস্ত আকাশ ও তারাগুলিকে যেন আবৃত করিয়া ফেলিল। অদৃশ্যপ্রায় পর্ব্বতশ্রেণী হইতে শীতল বায়ু আসিয়া জানাইয়া দিল যে, পর্বতশিখর তখনও সম্পূর্ণরূপে তুষার-মুক্ত হয় নাই। বাতাস বড় ধীরে বহিতেছিল, এবং মধ্যে মধ্যে একেবারে বন্ধ হইয়া যাইতেছিল ; বোধ হইতেছিল, যেন বায়ুদেবতা তখনও ঘুমাইয়া আছেন, শয্যাত্যাগ করিয়া BDB BB DDDDD DYYD D S নাবিকর নোঙ্গর উত্তোলন করিল। আমি হাল ধরিয়া বসিলাম এবং তীখানি প্রকাণ্ড প্রেতিমূর্ত্তির ন্যায় অনায়াসে নিস্তব্ধ জলরাশির উপর দিয়া চলিয়া যাইতে লাগিল। বন্দর হইতে বাহির হইবার জন্য আমাদিগকে