পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (দ্বিতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ জ্যেষ্ঠের জীবনের দারুণ নিস্ফলতা ও অসীম বেদনা কনিষ্ঠের নিকট পরিস্ফুট হইয়া উঠিল। তিনি বুঝিলেন, যুক্তিতর্কে তিনি জ্যেষ্ঠকে নিরস্ত করিতে পরিবেন না। তিনি তথাপি বলিলেন, “তবে অনুমতি করুন, আমি আপনার সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ করিব।” রাজা সস্নেহে বলিলেন, “তুমি সে অনুমতি পাইবে না ; আমি দিব না। জীবনে তোমার আকষর্ণ আছে ; সেই আকষর্ণ তোমার মঙ্গলকর । তাহাই তোমাকে কর্ত্তব্য-পথে পরিচালিত করিবে। যদি তোমার দ্বারাও আমার অনুষ্ঠিত কার্য্য সম্পন্ন না হয় তুমি তোমার সন্তানদিগকে ব্রত উদযাপনের ভার দিয়া যাইতে পরিবে ।” অজয় সিংহ কিছুতেই মন স্থির করিতে পারিতেছেন না দেখিয়া রাজা বলিলেন, “অজয় বেলা হইয়াছে। যদি সময় পাই আবার এ বিষয়ের আলোচনা করিব।” অজয় সিংহকে উখনোয্যোগী দেখিয়া রাজা বলিলেন, “অজয়, যাইও না । আজি দুই ভাই একত্র আহার করিব।” জেষ্ঠের স্বর মেহাদ্র । এই কথায় অজয় সিংহের নয়ন অশ্রুপূর্ণ হইয়া আসিল। তিনি বুঝিলেন, হয় তা জীবনে দুই ভ্রাতার মিলনের এরূপ সুযোগ আর ঘটবে না বুঝিয়াই আজ জ্যেষ্ঠ এ কথা বলিলেন । আহারে বসিয়া জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের সহিত অন্য কথা কহিতে লাগিলেন--তিনি নানা বিষয়ের আলাপ করিতে লাগিলেন, যেন আসন্ন বিপদের ছায়া-মৃত্যুর মূর্ত্তি তাহাকে কিছুমাত্র বিচলিত করিতে পারে নাই। জ্যেষ্ঠের অবিচলিত ধৈর্য্য, সঙ্কল্পের দৃঢ়তা, হৃদয়ের বল ও আদর্শের উচ্চতা দেখিয়া অজয় সিংহের হৃদয় ভক্তিতে পুর্ণ হইয়া গেল । অপরাহে সংবাদ আসিল, আর এক দিনে মোগল-বাহিনী রাজ্যের সীমায় উপনীত হইবে। রাজা, মন্ত্রী, সেনাপতি, অজয় সিংহ ও শঙ্কর সিংহকে লইয়া কর্ত্তব্য বিষয়ের বিচারে প্রবৃত্ত হইলেন।