পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৪ - আর্য্যাবর্ত্ত । གག་སྒན་བn ། পার্শ্বৱর্ত্তী বনভূমি হইতে নির্গত হইয়া আসিল। তাহারা আসিবামাত্র চতুৰ্দিক হইতে অসংখ্য কৃষ্ণবর্ণ, তাম্রনির্ম্মিত অস্ত্রধারী পুরুষ তাহাদিগকে আক্রমণ করিল। শ্বেতকায় ব্যক্তিগণ আত্মরক্ষার চেষ্টা না করিয়া মৃত্যুকালে অগ্নি ও আকাশকে লক্ষ্য করিয়া নুতন ভাষায় গম্ভীর শব্দে কি বলিয়া গেল। সেই শব্দমালার গাম্ভীর্য্য এত অধিক যে, আক্রমণকারীদিগের মধ্যে কয়েকজন ভীত হইয়া পলায়ন করিল। শ্বেত-কৃষ্ণ মনুষ্যের বিবাদের ফলে আমি অগ্নির আলোক দৰ্শন করিলাম। পরে কতবার সেরূপ আলোক দেখিয়াছি, কতবার উজ্জলতর অগ্নি আমার নিকটে প্রজালিত হইয়াছে, কিন্তু প্রথম সে আলোকদর্শনে যে আনন্দ তাহ পয়ে আর কখনও অনুভব করি নাই। সুর্য্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজত শুভ্রবর্ম্মাবৃত, সুতীক্ষ অস্ত্রধারী শ্বেতকায় সৈনিকগণ দলে দলে আসিয়া ভস্মরাশি বেষ্টন করিয়া ফেলিল । বিলাপে পর্বতের সানুদেশ প্রতিধ্বনিত হইতে লাগিল। দলে দলে সৈনিকবর্গ কাষ্ঠ * অন্বেষণে চলিয়া গেল। কেবল কয়েকজন মাত্র মৃতদেহের পাশ্বের্ণ বসিয়া রহিল। কিয়ৎকাল মধ্যে চিতাধুম গগন স্পর্শ করিল, অরণ্যবাসী শ্বেতকায় মনুষ্যগুলির দেহ ভস্মীভূত হইয়া গেল। দখবিশিষ্ট অস্থিগুলি একটি ক্ষুদ্র মৃন্ময় পাত্রে রক্ষিত হইল, দলে দলে শ্বেতকায় মনুষ্য আসিয়া তাহাতে পুষ্পবৃষ্টি করিয়া গেল। সন্ধ্যাকালে একটি গুরুভার দণ্ডের সহিত ভস্মধারটি ভূগর্ভে প্রোথিত হইল। ইহার পর কয়েক দিবস। চারি পাশ্বের পর্বতশ্রেণী হইতে গভীর আর্তনাদ উখিত হইত। শুনিতে পাইতাম, কৃষ্ণবর্ণ মনুষ্যজাতির শোণিতে পর্ব্বতের সানুদেশ রঞ্জিত হইতেছে, ভীষণ প্রতিহিংসার প্রাবল্যে শ্বেতকায় সৈনিকগণ কৃষ্ণকায় জাতির ধ্বংস সাধন করিতেছে, বৃদ্ধ ও বালক, স্ত্রী ও পুরুষ দলে দলে নিহত হইতেছে, পর্ব্বতের উপত্যকাগুলি ক্রমশঃ জনশূন্য হইতেছে। বায়ু আসিয়া ভস্মরাশিকে উড়াইয়া লইয়া গেল, ভস্মসিঞ্চিত ভূমির উর্বরতা বৰ্দ্ধিত হইল, অতি অল্পকালের মধ্যে উপত্যক আবার স্নিগ্ধ-শ্যাম বনব্রাজিতে আবৃত হইল। ইহার পর আমরা আর সর্বদা মানুষ্যের মুখ দেখিতে পাইতাম না, কৃষ্ণকায় মনুষ্যেরা অতি সাবধানে মৃগয়া করিতে আসিত, অধিক সংখ্যক কৃষ্ণকায় মনুষ্য আর কখনও দেখি নাই। কখন অরণ্যবাসী জটাশ্মশ্রীধারী পুরুষগণ সমিধ্যপুস্পাহরণের জন্য গভীর বনে আসিতেন, কখন বা প্রতিহিংসাপরবশ কৃষ্ণকায় অলক্ষ্যে শ্বেতকায় বনাচারীর পশ্চাদগমন করিত। কিন্তু সে পর্ব্বতের সানুদেশে বা উপত্যকায় বহুকাল পর্য্যন্ত মনুষ্যের বাস ছিল না। শুনিয়াছি, ক্রমে শ্বেতকায় মানুন্যে দেশ প্লাবিত হইয়া গেল, কৃষ্ণকায় মানবজাতি ক্রমে লুপ্ত হইতে লাগিল, যাহারা অবশিষ্ট মুহিল তাঁহায় অধীনতা স্বীকার করিয়া