পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর্য্যাবর্ত্ত। (খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দী । ) প্রসিদ্ধ চীন দেশীয় পরিব্রাজক হিউয়েন সাং যখন ভরেতবর্ষে আসিয়াছিলেন, তখন ভারতবর্ষ বহু খণ্ড রাজ্যে বিভক্ত। তিনি তাহার সমসাময়িক প্রায় সকল রাজ্যের বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। তিনি বুদ্ধের জন্মভূমি-পুণ্য তীর্থ ভারতবর্ষ পরিভ্রমণ করিয়া যাহা যাহা দেখিয়াছিলেন ও শুনিয়াছিলেন। সে সকলের বিস্তৃত বিবরণ র্তাহার পুস্তকে লিখিত হইয়াছে। এই কারণে র্তাহার ভ্রমণকাহিনী পাঠে খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে আর্য্যাবর্ত্তের অবস্থা আমাদিগের মানসন্নয়নসমক্ষে সমুজ্জল বর্ণে চিত্রিত ও সুস্পষ্ট হইয়া উঠে। হিউয়েন সাংএর ভারত ভ্রমণ-কালে উত্তর ভারতে নৃত্যুনাধিক পঞ্চবিংশতি সংখ্যক রাজ্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। এই সকলের মধ্যে কান্তকুজের অবস্থাই সর্বাপেক্ষা উন্নতত্ত্ব ও সমৃদ্ধ ছিল । তখন দ্বিতীয় শিলাদিত্য এই রাজ্যে প্রবল প্রতাপে রাজত্ব করিতেছিলেন। র্তাহার বাহুবলে বহু নৃপতি পরাজিত ও কান্তকুজ রাজ্য বিস্তৃত হইয়াছিল । খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে ভারতলালামভূত মথুৱা, স্থানেশ্বর, অযোধ্যা প্রভৃতি রাজ্য সুপ্রতিষ্ঠিত। হিউয়েন সাংএর গ্রন্থে উত্তর ভারতে এই সকল প্রসিদ্ধ রাজ্যের বিবরণের সঙ্গে সঙ্গে হিমালয়ের পাদস্থিত কতিপয় পার্বত্য জাতির বিবরণও লিপিবদ্ধ আছে। হিউয়েন সাং হিমালয় প্রদেশে ব্রহ্মপুরা নামক এক রাজ্য পরিদর্শন করিয়াছিলেন । এই দেশ বর্তমান সময়ে গাড়োয়াল ও কুমায়ুন নামে পরিচিত। খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মধ্যভাগে একজন রমণীর হন্তে এই রাজ্যের শাসনভাৱ ন্যস্ত ছিল। হিউয়েন সাং লিখিয়াছেন, “বহুকাল হইতে রমণীরাই এই দেশের রাজকার্য্য নির্বাহ করিয়া আসিতেছেন । ইহার ফলে এই দেশ স্ত্রীরাজ্য নামে খ্যাত। শাসনকত্রীর স্বামী ‘রাজা” উপাধি লাভ করিয়া থাকেন সত্য, কিন্তু তিনি রাজ্যের অবস্থা বা শাসনকার্য্য সম্বন্ধে কিছুই অবগত নহেন । পুরুষগণ কেবল যুদ্ধ ও ভূমিকৰ্ষণ করেন।” হিউয়েন সাং উত্তর ভারতের যে বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন, তাহা নানা কথায় পূর্ণ এবং কৌতুহলোদ্দীপক। আমরা নিয়ে তাহার লিখিত কতিপয় রাজ্যের বিবরণের অনুবাদ প্রদান করিলাম।