পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ, ১৩১৭ ৷৷ চিত্রকর। c “জননীর মৃত্যুতে চিত্রকর জগৎ অন্ধকার দেখিল। সংসারের কার্য্যে সে যেমন অনভিজ্ঞ তেমনই অপারগ । দারুণ শোক ও পদে পদে অসুবিধা ভোগ করিয়া সে বিব্রত হইয়া পড়িল । “শোকের প্রথম বেগ প্রশস্থিত হইলে সে আবার চিত্রাঙ্কনের চেষ্টা করিল ; কিন্তু কিছুতেই কৃতকার্য হইতে পারিল না। চিত্র অঙ্কিত করিতে বসিলেই সেই মানস-প্রতিমার” কথা মনে পড়িত ; চক্ষু অশ্রুপূর্ণ হইয়া আসিত ; অঙ্গলি হইতে তুলিকা পড়িয়া যাইত। “এই অবস্থায় কয় দিন গেল তাহার পর সে সেই চিত্র আবার অঙ্কিত করিতে বসিল । হায় দুরাশা ! সকল চেষ্টা ব্যর্থ হইল। হৃদয়ে কোন ভাব - কোন চিন্তা একবার যেরূপে ফুটিয়া উঠে, আর কখন সেই রূপে প্রত্যাবর্ত্তন করে না। তাহার পরিবর্তন আনিবার্য্য। গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি যদি হারাইয়া যায়। তবে গ্রন্থকার যত চেষ্টাই করুন না-আর ঠিক সেই গ্রন্থের রচনা করিতে পারেন না । চিত্রকর একখানি অঙ্কিত চিত্রের প্রতিলিপি অঙ্কনের চেষ্টা করিলে প্রতিলিপিতে •কিছু কিছু পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। প্রত্যেক বারের চেষ্টা ভিন্ন ফল প্রসব করে। “চিত্রকর যে চিত্র অঙ্কিত করিল। তাহা সুন্দর হইতে পারে, কিন্তু পূর্বের সে চিত্র নহে । আমি সে চিত্র দেখিতে চাহিয়াছিলাম, কিন্তু দেখিতে পাই নাই । মানস-সুন্দরীর যে চিত্র সে একবার চিত্রপটে প্রতিফলিত করিয়াছিল তাহার নিকট এ চিত্র স্নান বোধ হওয়ায় শিল্পী শেষ চিত্রখানি নষ্ট করিয়া ফেলিয়াছিল । “সে চিত্র নষ্ট করিবার পর চিত্রকর একান্ত অস্থির হইয়া উঠিল । সে আর একবার প্রথম চিত্রখানি দেখিবার জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠিল । এক দিন নিশীথে অনিদ্রাকাতর চিত্রকারের হৃদয়ে সেই ব্যাকুলতা অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিল। সেই উজ্জল নয়ন, সেই কোমল ওষ্ঠাধর, সেই বিশ্রাস্ত কুন্তল তাহার সেই মানস-সুন্দরী যেন সত্যসত্যই তাহাকে আহবান করিতে লাগিল । সে আহবানে সে স্থির থাকিতে পরিবে কি ? “শেষে তাহার পক্ষে সে ব্যাকুলত নিবারণ করা অসম্ভব হইয়া দাড়াইল । সে প্রবল ইচ্ছার গতিরোধ করিতে পারিল না । “যে ধনী তাহার চিত্রপট ক্রয় করিয়াছিলেন চিত্রকার স্বয়ং যাইয়া তাহার কক্ষে কোন স্থানে ছবিখানি টাঙ্গাইলে উপযুক্ত আলোকপাতে চিত্র সুন্দর