পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/৬৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আঁখ্যান দেখিতে পাওয়া যায়। তবে কি ব্রাহ্মণ ভাগের বেদত্ব নাই ? সায়ণাচার্য্য এই আপত্তির উত্তর দিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, "ব্রাহ্মণ ভাগের পুরাণ বা ইতিহাস সংজ্ঞার কোন প্রমাণ দেখিতে পাওয়া যায় না। কিন্তু ও গ্রীবায়ুক্ত পদার্থ বিশেষের কলস, কুণ্ড ইত্যাদি সংজ্ঞা থাকিলেও উহার ঘট নাম হুইবে না, কে বলিল ? আমরা যাহাকে “শ্ব” বলি, কেহ তাহাকে । “ভগ” বলিলে, কি বস্তুর অন্যরূপতা প্রতিপাদন করা হইল ? “ডগ বা “খ” আখ্যায় আখ্যাত পদার্থ উভয় অবস্থাতেই একরূপই থাকিবে। সেই রূপ দুরূহ বেদের ব্যাখ্যান-ভাগ বলিয়া তাহার বেদত্ব অপনীত বা নষ্ট হইবে না। অন্যান্য শাস্ত্রেও এইরূপ দেখা যায়। মহামতি পতঞ্জলি পাণিনির ভাষ্য রচনা করিয়াছেন। এই ভাষ্য মহাভাষ্য নামে আখ্যাত। মহাভায্যের সর্ব প্রথমেই পতঞ্জলি বলিয়াছেন, . . “অর্থ শব্দানুশাসনম”-অথেত্যয়ং অধিকারার্থঃ শব্দানুশাসনং শাস্ত্রমধিকৃতং বেদিতব্যং।।’ ‘’ অর্থ শব্দানুশাসনম এই কথা স্বয়ং বলিয়া অথেত্যয়ং ইত্যাদি দ্বারা স্বয়ংই তাহার ব্যাখ্যা করিয়াছেন। এস্থানে অথেত্যয়ং ইত্যাদি ব্যাখ্যাংশেরও মহাভাষ্যত্ব সর্ববাদিসম্মত। এবং কাব্যপ্রকাশে কাব্যং যশসে ইত্যাদি বলিয়া নিজেই আবার তাহার বৃত্তি করিয়াছেন ; এই বৃত্তিগুলিও কাব্য প্রকাশ নামে প্রসিদ্ধ। এইরূপ ব্রাহ্মণ ভাগ মন্ত্রের ব্যাখ্যা হইলেও তাহার বেদত্ব দূরীভূত হইল না। সুত্র প্রভৃতি রচনা করিয়া তাহার প্রতীক গ্রহণ করতঃ ব্যাখ্যা করা গ্রন্থকারদিগের প্রাচীন রীতি। বেদেও এই রীতির যথার্থ সমাবেশ দেখা যায়। ঋষি-প্রোক্তত্ব মন্ত্র ও ব্রাহ্মণ উভয়াংশেই সমান। বেদেও যেমন মধুচ্ছন্দ প্রভৃতি ঋষি আছেন, ব্রাহ্মণেও সেই ঋষি থাকিলে ইহাতে কিছুমাত্র আপত্তির কারণ দেখিতে পাওয়া যায় না। বেদের ঋষিগণ বেদের * কর্ত্ত নহেন, দ্রষ্টা মাত্র। র্তাহারা যেরূপ মন্ত্র দর্শন করিয়াছেন সেইরূপ ব্রাহ্মণ:রূপা’ মন্ত্রের অর্থ করিয়াছেন। অর্থাৎ ব্রাহ্মণভাগ মন্ত্র-ভাগের ব্যাখা, ইহা খেলিলেও বেদৰ দূরীভূত হয় না। ইহা পূর্বে বলা হইয়াছে। এখন মন্ত্র ঐছাগে ঋষি আছেন বলিয়া যে মন্ত্র ভাগই বেদ, ব্রাহ্মণ ভাগ বেদ নহে, এইরূপ : আপত্তি উত্থাপিত হইতে পারে না। কারণ “খৰি দৰ্শনাৎ নতু কর্তৃত্বাৎ” দর্শন করিয়াছেন, বলিয়া ঋষি হইয়াছেন ; কর্ত্তা বলিয়া নহে, এই বুৎপত্তি ধ্ৰুৱা ধৰিত্ব সাধিত হইয়াছে। সুতরাং সেই দৰ্শন যেমন মন্ত্রতাগে আছে ।