পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/৮১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই দিন মনে মনে কুনালের সর্বনাশী-সাধন করিতে কৃতসঙ্কল্প হইলেন। কিছুদিন মনে মনে সঙ্কল্প স্থির করিয়া, এক দিন তিনি অশোককে ‘সুমিষ্ট বাক্যে ভুলাইয়া কুনালকে সুদূর তক্ষশিলার শাসনকর্ত্তা রূপে প্রেরণ করিলেন। সুদূর তক্ষশিলায় কুনালকে প্রেরণ করিবার উদ্দেশ্য এই যে, কোনরূপে তাহাকে গৃহ হইতে দূর দেশে পাঠাইতে পারিলেই, অশোকের মৃত্যুর পর তাহাকে পিতৃসিংহাসন হইতে বঞ্চিত করা সহজ হইবে ; অধিকন্তু স্বস্য কোন উপায় উদ্ভাবন করিয়া ভবিষ্যতে তাহাকে বিপদগ্রস্ত করাও ছকর হইবে না। এই পিতৃ আজ্ঞার পশ্চাতে কুনাল বিমাতার প্রচ্ছন্ন অভিসম্পাত স্পষ্ট উপলব্ধি করিলেন। কিন্তু পিতৃ-আজার বিপরীতাচরণ করা তাহার অভ্যাসবিরুদ্ধ; সুতরাং, তিনি পিতৃআজ্ঞা শিরোধার্য্য করিয়া ও চিরপরিচিত স্বৰ্গাদপী গরীয়সী জন্মভূমির নিকট চিরবিদায় লইয়া, চিরপোষিত পরিমান আশা বক্ষে ধারণ করতঃ, ভবিষ্যজীবনের নূতন অঙ্ক কিরূপে রচনা করিবেন তাহা চিন্তা করিতে করিতে সুদুর প্রবাসাভিমুখে যাত্রা করিলেন। কুনাল নুতন স্থানে আসিয়া নুতন করিয়া “ঘর কন্না” পাতিয়াছেন। আবার কুহকিনী আশা তাহার মনোরাজ্যে কল্পিত ভবিষ্য সুখরাজ্যের কল্পনার সৃষ্টি করিয়া সেই তাপদগ্ধ জীবনের স্মৃতি ধীরে ধীরে মুছিতেছিল। কিন্তু নিয়তি কোন অজানিত রাজ্যে বসিয়া অন্যরূপে তঁহার জীবননাটক গঠিত করিয়া তুলিতেছিল। একদিন রাজকার্য্য শেষ হইলে, অশোক মহিষীর কক্ষে বিশ্রামার্থ নিদ্রিত ছিলেন। উপযুক্ত সময় বুঝিয়া, অশোকপত্নী তক্ষশিলার মন্ত্রিবর্গকে এই পত্র লিখিলেন, তোমার আদেশলিপি প্রাপ্ত হইবামাত্র কুমার কুন্নালের চক্ষু উৎপাটিত করিয়া তাহাকে রাজ্য হইতে বিতাড়িত করিয়া দিবে। তিস্যরক্ষিতা নিদ্রিত অশোকের চিন্তু উক্ত পত্রের উপর অঙ্কিত করিয়া ঐ আদেশ-লিপি অবিলম্বে তক্ষশিলায় প্রেরণ করিলেন। ক্ষু, * * আদেশ প্রাপ্ত হইয়া মন্ত্রিগণ কিংকর্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া পড়িলেন। তাহাদিগের হতবুদ্ধিতা লক্ষ্য করিয়া কুমার পত্রের মর্ম্মার্থ তাহাকে জ্ঞাত করিতে আদেশ করিলেন। অমাত্যগণ সেই কুলীশ-কঠোর আদেশ ব্যক্তি করিতে ইতস্ততঃ করিতে লাগিল। কিন্তু এই কঠোর আদেশ শ্রবণ করিয়া কুনাল্পের কোনরূপ ভাবান্তর উপস্থিত হইল না। তিনি রাজাদেশ অবিলম্বে