পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ৮৬ ]

শিখ্‌ব কি? তার ইচ্ছা হয় তো সে আমাদের কাছে এসে শিখে যাউক। আমরা এক্ষণে রং চাই —মজা চাই —আয়েস চাই।

 ঠকচাচা সর্ব্বদাই রামলালের গুণানুবাদ শুনেন ও বসিয়া বসিয়া ভাবেন। ঠকের আঁচ সময় পাইলেই বাবুরামের বিষয়ের উপর দুই এক ছোবল মারিবেন। এপর্য্যন্ত অনেক মামলা গোলমালে গিয়াছে —ছোবল মারিবার সময় হয় নাই কিন্তু চারের উপর চার দিয়া ছিপ ফেলার কসুর হয় নাই। রামলাল যে প্রকার হইয়া উঠিল তাহাতে যে মাছ পড়ে এমন বোধ হইল না —পেঁচ পড়িলেই সে পেঁচের ভিতর যাইতে বাপকে মানা করিবে। অতএব ঠকচাচা ভারি ব্যাঘাত উপস্থিত দেখিল এবং ভাবিল আশার চাঁদ বুঝি নৈরাশ্যের মেঘে ডুবে গেল, আর প্রকাশ বা না পায়। তিনি মনোমধ্যে অনেক বিবেচনা করিয়া একদিন বাবুরামকে বলিলেন, বাবু সাহেব! তোমার ছোট লেড়্‌কার ডৌল নেকা করে মোর বড়ো গর্মি হচ্ছে। মোর মালুম হয় ওনা দেওয়ানা হয়েছে—তেনা মোর উপর বড় খাপ্পা, দশ আদমির নজ্‌দিগে বলে মুই তোমাকে খারাপ কর্‌লাম —এ বাত শুনে মোর দেলে বড় চোট লেগেছে। বাবু সাহেব! এ বহুত বুরাবাত —এজ এসমাফিক মোরে বল্‌লে—কেল তোমাকেও শক্ত২ বল্‌তে পারে। লেড়্‌কা ভাল হবে —নরম হবে —বেতমিজ ও বজ্জাত হলো, এলাজ দেয়া মোনাসেব। আর যে রবক সবক পড়ে তাতে যে জমিদারি থাকে এতনা মোর এক্কেলে মালুম হয় না।

 যে ব্যক্তির ঘটে বড় বুদ্ধি নাই সে পরের কথায় অস্থির হইয়া পড়ে। যেমন কাঁচা মাজির হাতে তুফানে নৌকা পড়িলে টল্‌মল্‌ করিতে থাকে —কুল-কিনারা পেয়েও পায় না—