পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১১৬ ]

বেণী বাবুকে দেখিয়া বলিলেন —মহশয়! ঘোর বিপদে পড়িয়াছি, বাটীতে বড় গোল কিন্তু সৎপরামর্শ কাহার নিকট পাওয়া যায় না। বরদা বাবু প্রাতে ও বৈকালে আসিয়া তত্ত্ব লয়েন কিন্তু তিনি যাহা বলেন সে অনুসারে আমাকে সকলে চলিতে দেন না—আপনি আসিয়াছেন ভাল হইয়াছে এক্ষণে যাহা কর্ত্তব্য তাহা করুন। বেচারাম বাবু বরদা বাবুর প্রতি কিঞ্চিৎকাল নিরীক্ষণ করিয়া অশ্রুপাত করিতে২ তাঁহার হাত ধরিয়া বলিলেন —বরদা বাবু! তোমার এত গুণ না হলে সকলে তোমাকে কেন পূজ্য করিবে। এই ঠকচাচা বাবুরামকে মন্ত্রণা দিয়া তোমার নামে গোমখুনি নালিশ করায় ও বাবুরাম ঘটিত অকারণে তোমার উপর নানা প্রকার জুলুম ও বদিয়ত হইয়াছে কিন্তু ঠকচাচা পীড়িত হইলে তুমি তাঁহাকে আপনি ঔষধ দিয়া ও দেখিয়া শুনিয়া আরাম করিয়াছ, এক্ষণেও বাবুরাম পীড়িত হওয়াতে সৎপরামর্শ দিতে ও তত্ত্ব লইতে কশুর করিতেছ না —কেহ যদি কাহাকে একটা কটূবাক্য কহে তবে তাহাদিগের মধ্যে একেবারে চটাচটি হয়ে শত্রুতা জন্মে, হাজার ঘাট মানামানি হলেও মনভার যায় না কিন্তু তুমি ঘোর অপমানিত ও অপকৃত হইলেও আপন অপমান ও অপকার সহজে ভুলে যাও —অন্যের প্রতি তোমার মনে ভ্রাতৃভাব ব্যতিরেকে আর অন্য কোন ভাব উদয় হয় না —বরদা বাবু! অনেকে ধর্ম্ম২ বলে বটে কিন্তু যেমন তোমার ধর্ম্ম এমন ধর্ম্ম আর কাহারো দেখিতে পাই না —মনুষ্য পামর তোমার গুণের বিচার কি করবে কিন্তু যদি দিনরাত সত্য হয় তবে এ গুণের বিচার উপরে হইবে। বেচারাম বাবুর কথা শুনিয়া বরদা বাবু কুণ্ঠিত হইয়া ঘাড় হেঁট করিয়া থাকিলেন পরে বিনয়