পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১৫২ ]

বিনি মূল্যে আপন২ জমির স্বত্ব ত্যাগ করত অন্য২ অধিকারে পলায়ন করিল। এই কারণে তালুকের আয় দুই-এক বৎসর বৃদ্ধি হওয়াতে ঠকচাচা গোঁপে চাড়া দিয়া হাত ঘুরাইয়া বাবুরাম বাবুর নিকট বলিতেন —“মোর কেমন কারদান দেখো” কিন্তু “ধর্ম্মস্য সূক্ষ্মাগতিঃ” —অল্পদিনের মধ্যেই অনেক প্রজা ভয়ক্রমে হেলে গোরু ও বীজধান লইয়া প্রস্থান করিল তাহাদিগের জমি বিলি করা ভার হইল, সকলেরই মনে এই ভয় হইতে লাগিল আমরা প্রাণপণ পরিশ্রমে চাষাবাস করিব দু-টাকা দু-সিকি লাভ করিয়া যে একটু শাঁসাল হবে তাহাকেই জমিদার বল বা ছলক্রমে গ্রাস কর্‌বেন —তবে আমাদিগের এ অধিকার থাকার কি প্রয়োজন? তালুকের নায়েব বাপু বাছা বলিয়াও প্রজালোককে থামাইতে পারিল না। অনেক জমি গরবিলি থাকিল —ঠিকে হারে বিলি হওয়া দূরে থাকুক কম দস্তুরেও কেহ লইতে চাহে না ও নিজ আবাদে খরচ খরচা বাদে খাজনা উঠান ভার হইল। নায়েব সর্ব্বদাই জমিদারকে এত্তেলা দিতেন, জমিদার সুদামতো পাঠ লিখিতেন —“গোজেস্তা সুরত খাজানা আদায় না হইলে তোমার রূটি যাইবে —তোমার কোন ওজর শুনা যাইবে না।” সময়বিশেষ বিষয় বুঝিয়া ধমক দিলে কর্ম্মে লাগে। যে স্থলে উৎপাত ধমকের অধীন নহে সে স্থলে ধমক কি কর্ম্মে আসিতে পারে? নায়েব ফাঁপরে পড়িয়া গয়ং গচ্ছরূপে আম্‌তা২ করিয়া চলিতে লাগিল —এদিকে মহল দুই তিন বৎসর বাকি পড়াতে লাটবন্দি হইল সুতরাং বিষয় রক্ষার্থে গিরিবি লিখিয়া দিয়া বাবুরাম বাবু দেনা করিয়া সরকারের মালগুজারি দাখিল করিতেন।

 এক্ষণে মতিলাল দলবল সহিত মহলে আসিয়া অবস্থিতি