পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১৬১ ]

বারও চক্ষু বুজি নাই —ভোর হতে না হতে পূজা-আহ্নিক অমনি ফুলতোলা রকমে সেরে সাহেবকে লইয়া আসিতেছি। ভয় কি? এ কি ছেলের হাতের পিটে? পুরুষের দশ দশা, আর বড় গাছেই ঝড় লাগে। কিন্তু এক কিস্তি টাকা না হইলে তদ্বিরাদি কিছুই হইতে পারে না —সঙ্গে না থাকে তো ঠকচাচীর দুই-একখানা ভারি রকম গহনা আনাইলে কর্ম্ম চল্‌তে পারে। এক্ষণে তুমি তো বাঁচ তার পরে গহনা টহনা সব হবে। বিপদে পড়িলে সুস্থির হইয়া বিবেচনা করা বড় কঠিন, ঠকচাচা তৎক্ষণাৎ আপন পত্নীকে এক পত্র লিখিয়া দিলেন। ঐ পত্র লইয়া বাঞ্ছারাম বটলর সাহেবের প্রতি দৃষ্টিপাতপূর্ব্বক চক্ষু টিপিয়া ঈষৎ হাস্য করিতে করিতে একজন সরকারের হাতে দিলেন এবং বলিলেন —তুমি ধাঁ করিয়া বৈদ্যবাটী যাইয়া ঠকচাচীর নিকট হইতে কিছু ভারি রকম গহনা আনিয়া এখানে অথবা আপিসে দেখ্‌তে২ আইস, দেখিও গহনা খুব সাবধান করিয়া আনিও, বিলম্ব না হয়, যাবে আর আসিবে —যেন এইখানে আছ। সরকার রুষ্ট হইয়া বলিল —মহাশয়। মুখের কথা, অম্‌নি বল্‌লেই হইল? কোথায় কলিকাতা —কোথায় বৈদ্যবাটী —আর ঠকচাচীই বা কোথায়? আমাকে অন্ধকারে ঢেলা মারিয়া বেড়াইতে হইবে, এক মুটা খাওয়া দূরে থাকুক এখনও এক ঘটি জল মাথায় দিই নাই —আজ ফিরে কেমন করিয়া আস্‌তে পারি? বাঞ্ছারাম অমনি রেগেমেগে হুম্‌কে উঠিয়া বলিলেন,—ছোটলোক এক জাতই স্বতন্তর, এরা ভাল কথার কেউ নয়, নাতি-ঝেঁটা না হলে জব্দ হয় না। লোকে তল্লাস করিয়া দিল্লী যাইতেছে, তুমি বৈদ্যবাটী গিয়া একটা কর্ম্ম নিকেশ করিয়া আস্‌তে পার না? সাকুব হইলে ইশারায় কর্ম্ম বুঝে —তোর চখে আঙ্গুল দিয়া বল্‌লুম তাতেও হোঁস হৈল না? সর্‌কার অধোমুখে