না রাম না গঙ্গা কিছুই না বলিয়া বেটো ঘোড়ার ন্যায় ঢিকুতে২ চলিল ও আপনা আপনি বলিতে লাগিল —দুঃখি লোকের মানই বা কি আর অপমানই বা কি? পেটের জন্য সকলই সহিতে হয়। কিন্তু হেন দিন কবে হবে যে ইনি ঠকচাচার মতো ফাঁদে পড়্বেন। আমার দেক্তা উনি অনেক লোকের গলায় ছুরি দিয়াছেন —অনেক লোকের ভিটে মাটি চাটি করিয়াছেন—অনেক লোকের ভিটায় ঘু ঘু চরাইয়াছেন। বাবা! অনেক উকিলের মুৎসুদ্দি দেখিয়াছি বটে কিন্তু ওর জুড়ি নাই। রকমটা —ভাজেন পটোল, বলেন ঝিঙ্গা, যেখানে ছুঁচ চলে না সেখানে বেটে চালান। এদিকে পূজা আহ্নিক, দোল দুর্গোৎসব, ব্রাহ্মণ ভোজন ও ইষ্টনিষ্ঠাও আছে। এমন হিন্দুয়ানির মুখে ছাই —আগা গোড়া হারামজাদ্কি ও বদ্জাতি!
এখানে ঠকচাচা, বাঞ্ছারাম ও বটলর বসিয়া আছেন, মকদ্দমা আর ডাক হয় না। যত বিলম্ব হইতেছে তত ধড়্ফড়ানি বৃদ্ধি হইতেছে। পাঁচটা বাজে২ এমন সময়ে ঠকচাচাকে মাজিস্ট্রেটের সম্মুখে লইয়া খাড়া করিয়া দিল। ঠকচাচা গিয়া সেখানে দেখেন যে শিয়ালদার পুষ্করিণী হইতে জাল করিবার কল ও তথাকার দুই-একজন গাওয়া আনিত হইয়াছে। মকদ্দমার তদারক হওনান্তর মাজিস্ট্রেট হুকুম দিলেন যে, এ মামলা বড় আদালতে চালান হউক। আসামীর জামিন লওয়া যাইতে পারা যায় না সুতরাং তাহাকে বড় জেলে কয়েদ থাকিতে হইবে।
মাজিস্ট্রেটের হুকুম হইবামাত্রে বাঞ্ছারাম তেড়ে আসিয়া হাত নাড়িয়া বলিলেন —ভয় কি? একি ছেলের হাতের পিটে? এ তো জানাই আছে যে,মকদ্দমা বড় আদালতে হবে —আমরাও তাই তো চাই। ঠকচাচা মুখখানি ভাবনায়