লইয়া নৌকায় উঠিলেন। নৌকা দেখিতে২ ভাঁটার জোরে বাগবাজারের ঘাটে আসিয়া ভিড়িল। রাত্রি প্রায় শেষ হইয়াছে—কলুরা ঘানি জুড়ে দিয়েছে—বল্দেরা গোরু লইয়া চলিয়াছে—ধোবার গাধা থপাস২ করিয়া যাইতেছে—মাছের ও তরকারির বাজরা হু২ করিয়া আসিতেছে—ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা কোশা লইয়া স্নান করিতে চলিয়াছেন—মেয়েরা ঘাটে সারি২ হইয়া পরস্পর মনের কথাবার্ত্তা কহিতেছে। কেহ বলিছে, পাপ ঠাকুরঝীর জ্বালায় প্রাণটা গেল—কেহ বলে আমার শাশুড়ী মাগী বড়ো বৌকাঁটকি—কেহ বলে দিদি, আমার আর বাঁচ্তে সাধ নাই—বৌছুঁড়ী আমাকে দুপা দিয়া থেত্লায়—বেটা কিছুই বলে না; ছোঁড়াকে গুণ করে ভেড়া বানিয়েছে—কেহ বলে আহা অমন পোড়া জাও পেয়েছিলাম দিবারাত্রি আমার বুকে বসে ভাত রাঁধে, কেহ বলে, আমার কোলের ছেলেটির বয়স দশ বৎসর হইল— কবে মরি কবে বাঁচি এই বেলা তার বিএটী দিয়ে নি।
এক পসলা বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে। আকাশে স্থানে২ কাণামেঘ আছে—রাস্তাঘাট সেঁত২ করিতেছে। বাবুরাম বাবু এক ছিলিম তমাক্ খাইয়া একখানা ভাড়া গাড়ী অথবা পাল্কির চেষ্টা করিতে লাগিলেন কিন্তু ভাড়া বনিয়া উঠিল না—অনেক চড়া বোধ হইল। রাস্তায় অনেক ছোঁড়া একত্র জমিল। বাবুরাম বাবুর রকম সকম দেখিয়া কেহ২ বলিল—ওগো বাবু, ঝাঁকা মুটের উপর বসে যাবে? তাহা হইলে দু-পয়সায় হয়? তোর বাপের ভিটে নাশ করেছে—বলিয়া যেমন বাবুরাম দৌড়িয়া মারিতে যাবেন অমনি দড়াম্ করিয়া পড়িয়া গেলেন। ছেঁড়া গুলা হো২ করিয়া দূরে থেকে হাত তালি দিতে লাগিল। বাবুরাম বাবু অধোমুখে শীঘ্র একখানা লকাটে রকম কেরাঞ্চিতে ঠকচাচা প্রভৃতিকে লইয়া উঠিলেন এবং খন্২ ঝন্২ শব্দে