প্রমদা। দিদি! আমি কি সাধ করে ভাবি? মনে বুঝে না কি করি? ছেলেবেলা বাপ একজন কুলীনের ছেলেকে ধরে এনে আমাকে বিবাহ দিয়েছিলেন —এ কথা বড়ো হয়্যে শুনেছি। পতি কত শত স্থানে বিয়ে করেছেন, আর তাঁহার যেরূপ চরিত্র তাতে তাঁহার মুখ দেখ্তে ইচ্ছা হয় না। অমন স্বামী না থাকা ভালো।
মোক্ষদা। হাবি! অমন কথা বলিস্নে —স্বামী মন্দ হউক ছন্দ হউক, মেয়েমানুষের এয়ত্ থাকা ভাল।
প্রমদা। তবে শুন্বে? আর বৎসর যখন আমি পালা জ্বরে ভুগ্তেছিনু —দিবারাত্রি বিছানায় পড়ে থাকতুম —উঠিয়া দাঁড়াইবার শক্তি ছিল না, সে সময় স্বামী আসিয়া উপস্থিত হলেন। স্বামী কেমন, জ্ঞান হওয়া অবধি দেখি নাই, মেয়ে মানুষের স্বামির ন্যায় ধন নাই। মনে করিলাম দুই দণ্ড কাছে বসে কথা কহিলে রোগের যন্ত্রণা কম হবে। দিদি বল্লে প্রত্যয় যাবে না —তিনি আমার কাছে দাঁড়াইয়াই অমনি বললেন ষোল বৎসর হইল তোমাকে বিবাহ করে গিয়াছি —তুমি আমার এক স্ত্রী —টাকার দরকারে তোমার নিকটে আসিতেছি —শীঘ্র যাব —তোমার বাপকে বল্লাম তিনিতো ফাঁকি দিলেন —তোমার হাতের গহনা খুলিয়া দাও। আমি বল্লাম —মাকে জিজ্ঞাসা করি —মা যা বলবেন তাই কর্বো। এই কথা শুনিবা মাত্রে আমার হাতের বালা গাছাটা জোর করে খুলে নিলেন। আমি একটু হাত বাগড়াবাগড়ি করেছিনু, আমাকে একটা লাথি মারিয়া চলিয়া গেলেন —তাতে আমি অজ্ঞান হয়্যে পড়েছিনু, তারপর মা আসিয়া আমাকে অনেকক্ষণ বাতাস করাতে আমার চেতনা হয়।
মোক্ষদা। প্রমদা তোর দুঃখের কথা শুনিয়া আমার