পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ৪৬ ]

 ইতিমধ্যে পুলিশের সিঁড়ির নিকট একটা গোল উঠল, একখানা গাড়ী গড়২ করিয়া আসিয়া উপস্থিত হইল—গাড়ীর দ্বার খুলিবামাত্র একজন জীর্ণ শীর্ণ প্রাচীন সাহেব নামিলেন—সারজনেরা অমনি টুপি খুলিয়া কুরনিশ করিতে লাগিল ও সকলেই বলিয়া উঠিল ব্লাকিয়র সাহেব আস্‌ছেন। সাহেব বেঞ্চের উপর বসিয়া কয়েকটা মারপিটের মকদ্দমা ফয়সালা করিলেন পরে মতিলালের মকদ্দমা ডাক হইল। একদিকে কালে খাঁ ও ফতে খাঁ ফৈরাদি দাঁড়াইল আর একদিকে বৈদ্যাবাটীর বাবুরাম বাবু, বালীর বেণী বাবু, বটতলার বক্রেশ্বর বাবু, বৌবাজারের বেচারাম বাবু, বাহির সিমলার বাঞ্ছারাম বাবু ও বৈটকখানার বটলর সাহেব দাঁড়াইলেন। বাবুরাম বাবুর গায়ে জোড়া, মাথায় খিড়কিদার পাগড়ি, নাকে তিলক, তার উপরে হোমের ফোঁটা—দুই হাত জোড়া করিয়া কাঁদো২ ভাবে সাহেবের প্রতি দেখিতে লাগিলেন—মনে করিতেছেন যে চক্ষের জল দেখিলে অবশ্যই সাহাবের দয়া উদয় হইবে। মতিলাল, হলধর, গদাধর ও অন্যান্য আসামীরা সাহেবের সম্মুখে আনীত হইল। মতিলাল লজ্জায় ঘাড় হেঁট করিয়া রহিল, তাহার অনাহারে শুষ্ক বদন দেখিয়া বাবুরাম বাবুর হৃদয় বিদীর্ণ হইতে লাগিল। ফৈরাদিরা এজেহার করিল যে আসামীরা কুস্থানে যাইয়া জুয়া খেলিত, তাহাদিগকে ধরাতে বড় মারপিট করিয়া ছিনিয়ে পালায়—মারপিটের দাগ গায়ের কাপড় খুলিয়া দেখাইল। বটলর সাহেব ফৈরাদির ও ফৈরাদির সাক্ষির উপর অনেক জেরা করিয়া মতিলালের সংক্রান্ত এজেহার কতক কাঁচিয়া ফেলিলেন। এমতো কাঁচান আশ্চর্য্য নহে কারণ একে উকিলী ফন্দি, তাতে পূর্ব্বে গড়াপেটা হইয়াছিল—