পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আলোর ফুলকি
১১

শুধোলেন, “তোর আজ হল কী।”

 সুরকি ভয়ে ভয়ে ঢোক গিলে বললে, “কুঁ-ক বলি—”

 কুঁকড়ো গম্ভীর মুখে বললেন, “বলেই ফেল্‌ না। বনিতার ভনিতার কবিতার কোন্‌টা বাকি?” উত্তর হল, “বল তো ভালোবাস, কিন্তু—”

 “কথাটা চেপে যাও ছোটো বউ, চেপে যাও।” কুঁকড়ো উত্তর করলেন।

 ছোটো বউ ছাড়বার পাত্রী নয়, কান্না ধরলে, “না আমি শুনবই।” কুঁকড়ো বিরক্ত হয়ে বলে উঠলেন, “আর ছাই শুনবে কি-ই-ই।” কুঁকড়োকে সুরকি একলা পেয়ে কিছু মতলব হাসিলের চেষ্টায় আছে সব মুরগিই সেটা এঁচেছিল। তারা খাবারের চেষ্টায় কেউ যায় নি। এখন সাদি এক-কোণ থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে এসে বললে, “তোমার পাটরানী আমি, সাদি।” কুঁকড়ো বিষম গম্ভীর হয়ে বললেন, “কে বললে— না।” সাদি একটু গলা চড়িয়ে বললে, “আমায় বলতেই হবে।” ইতিমধ্যে এক দিক থেকে কালি এসে বলছে, খুব বিনিয়ে বিনিয়ে, “কও, আমি তোমার সু-ও-রা-নী।” কুঁকড়ো ঠিক তেমনি সুরে উত্তর করলেন, “কি— না— বল— গা।” কালি সুর ধরলে “বল না, বল না...” অমনি সাদি বলে উঠল, “মন্তরটা কী? যার গুণে তুমি গুণীর মতো গান গাও?” কাছে ঘেঁষে সুরকিও সুর ধরলেন, “হ্যাঁগা, শুনেছি তোমার গলার মধ্যে একটা পিতলের রামশিঙে পরানো আছে, আর তাতেই নাকি লোকে তোমার নাম দিয়েছে আম-পাখি।”

 কুঁকড়ো ব্যাপার বুঝে খুব খানিকটা হেসে মাথা হেলিয়ে বললেন, “আছে তো আছে। এই গলার একেবারে টুঁটির ঠিক মাঝখানে খুব শক্ত জায়গায় সেটা লুকোনো আছে, খুঁজে পাওয়া শক্ত।” বীজমন্তরটা মুরগিদের কানে দেবার জন্যে কুঁকড়ো মোটেই ব্যস্ত ছিলেন না, তবু খুব চুপিচুপি তাদের প্রত্যেকের কানের কাছে মুখ নিয়ে নিয়ে বললেন, “দেখে, মাঠের মধ্যে যখন চরতে যাচ্ছ, তখন খবরদার ঘাসের ফুল মাড়িয়ে না, ফুলের পোকা খেয়ে কিন্তু ফুল যেন ঠিক থাকে। খবরদার, যা-ও।”

 মুরগিরা চলে যাচ্ছিল, কুঁকড়ো তাদের ডেকে বললেন, “জানে, যখন যাবে চরতে—”

 এক মুরগি পাঠ বললে, “বাগিচায়”। কুঁকড়ে বললেন, “পয়লা মুরগি—” ইস্কুলের