পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
আলোর ফুলকি

 জিম্মা বললে, “আমার ওই বাক্সটার মধ্যে লুকোতে পার যেতে পারে,ইনি যদি রাজি হন।”

 “ভালো কথা।” বলেই সোনালি গিয়ে বাক্সে সেঁধোলেন, কিন্তু অনেকখানি সোনালি আঁচল বাক্সের বাইরে ছড়িয়ে রইল, জিম্মা সেটুকু ঢেকে চেপে গম্ভীর হয়ে বসল।

 জিন্ম বেশ বাগিয়ে বসেছে, এমন সময় বেড়ার ওধার থেকে ঝোলা-কান গালফুলো ডালকুত্তে ‘তম্মা’ উকি দিলেন। জিম্মা যেন দেখতেই পায় নি এই ভাবে রুটিই চিবচ্ছে। তম্মা বললে, “উঃ কিসের খোসবো ছাড়ছে।” জিম্মা সামনের থালাখানা দেখিয়ে বললে, “আজ একটু বনমুরগির ঝোল রাঁধা গেছে।”

 ডালকুত্তো এবার পষ্ট করে শুধোলে, জিন্ম এদিকে একটা সোনালিয়া পাখিকে আসতে দেখেছে কিনা। কুঁকড়ো সে কথা চাপা দিয়ে বলে উঠলেন, “তম্মার মুখটা কেমন গোমস দেখাচ্ছে-না, জিম্মা।”

 জিম্মা ধীরে সুস্থে উত্তর করলে, “একটা সোনালী টিয়ে মাঠের উপর দিয়ে উড়ে গেল দেখিছি, ওই ওদিকে—।” তম্মাটা আকাশে নাক তুলে কেবলি শুঁকতে লেগেছে, বনমুরগির গন্ধটা সত্যিই জিম্মার থালা থেকে আসছে কি না। কুঁকড়োর বুকের ভিতরটা বেশ একটুখানি গুরগুর করছে, এমন সময় দূর থেকে শিকারী সিটি দিয়ে তম্মাকে ডাক দিলে। তম্মা চলল দেখে কুঁকড়ো আর জিম্মা “রাম বলো” বলে হাফ ছাড়তেই চড়াইট ডাক দিলে, “বলি তম্মা।”

 “করো কী।” বলে কুঁকড়ো তাকে এক ধমক দিলেন, কিন্তু চড়াইটা আরো চেঁচিয়ে বলে উঠল, “বলি, ও তম্মা।” তম্মার গোমসা মুখটা আবার বেড়ার উপর দিয়ে উঁকি দিলে। কুঁকড়ো রেগে ফুলতে লাগলেন, চড়াই তম্মাকে বললে, “খুঁজে খুঁজে নারি যে পায় তারি।”

 তম্মা শুধোলে, “কী খুঁজে দেখি, বলো তো ভাই?”

 “চটপট তোমার ফোগলা গালের চির-খাওয়া দাঁতটি।” বলেই চড়াই সট করে নিজের খাঁচায় ঢুকল; “চোপরাও” বলে তম্মা সে তল্লাট ছেড়ে চোঁচা চম্পট।