পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
আলোর ফুলকি

 বেড়াল বললে, “যাবে না কী। নিশ্চয়ই যাবে। দেখ নি সোনালিয়া মুরগিটির সঙ্গে তার কত ভাব। আমি এই লিখে দিচ্ছি সোনালিয়া কুঁকড়োকে মজলিসে হাজির করবেই কাল।” চড়াই বুঝলে কালে বেড়ালটা সারাদিন ঘুমোয় বটে, কিন্তু কোথা কী হয় সেটুকুও দেখে শোনে, গোলাবাড়ির সব খবরই সে রাখে চোখ বুজে বুজেই।

 চড়াই বললে, “হাজির যেন হলেন কুঁকড়ে, তার পর?” “তার পর আর কী। কুঁকড়ে যখন দেখবেন পাড়ার সবাই অদ্ভুত সব মোরগদের খাতির করতেই ব্যস্ত, এমন-কি, হয়তো সোনালি পর্যন্ত, জেনে রেখে তখন খুটিনাটি বাধবেই আর তা হলেই—”

 “কুঁকড়োর লড়াই না হয়ে যায় না।” বলেই হুতুম ঠোঁটে ঠোঁট বাজিয়ে দিলেন। কিন্তু বেড়াল বললে, “ধরে লড়ায়ে কুঁকড়োর হার না হয়ে জিতই হয়ে গেল ফস করে। তখন উপায়?”

 কুটুরে অমনি বললে, “সে ভাবনা নেই,ওই-সবখাসা মোরগদের মধ্যে যে বাজখাই পালোয়ান মোরগ আছে তাকে পারে এমন কেউ দেখি নে। মানুষ তার পায়ে লোহার কাট-দেওয়া যে কাতান বেঁধে দিয়েছে তার এক ঘা খেলে কুঁকড়োকে আর দেখতে হবে না, একেবারে চিৎপটাং।” বলে কুটুরে হাসতে লাগল। সঙ্গে সব পেঁচাই ধাই ধাই করে নাচতে থাকল।

 হুতুম বললে, “আমি তো বাপু আগে গিয়ে তার মাথার মোরগ ফুলটা ছিঁড়ে খাব, কপা কপ কপা কপ।”

 চড়াই মনে মনে বললে, “গতিক তো খারাপ দেখছি। কুঁকড়োকে খবর দেব নাকি।” কিন্তু চেচিয়ে সে সবাইকে বললে, “বেশ হবে, খুব হবে, ভালোই হবে, কী বল।”

 কুটুরে বললে, “মজা বলে মজা। খাসা মোরগগুলোও দু-চারটে মরবে নিশ্চয়। পেট ভরে খাও; সেগুলো কি নষ্ট করা ভালো।”

 হুতুম চিলের কানে-কানে বললে, “কুঁকড়োর কাবারের পর দুজনে মিলে, বুঝেছ কিনা, চড়াই ভাতি...” আর তার পরে ধুঁধুলে পেঁচা কী বলতে যাচ্ছে এমন সময় দূরে কুঁকড়োর সাড়া পড়ল, “গ-তোল-তোল।” পেঁচারা শুনলে, “পটোল তোল।” অমনি ভয়ে সব