পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আলোর ফুলকি
৪৭

তখনো নীল দেখাচ্ছে, কুঁকড়ো ডাক দিলেন, আলো পড়ে খেতটা সবুজ হল, খেতে যাবার রাস্তাটি পরিষ্কার সাদা দেখা গেল, নদীটা কেমন ধুয়াটে দেখাচ্ছিল। কুঁকড়ো ডাকলেন, অমনি নদীর জলে পরিষ্কার নীল রঙ গিয়ে মিলল। হঠাৎ সোনালিয়া বলে উঠলে, “ওই যে সূর্য উঠেছেন।” কুঁকড়ো আস্তে আস্তে বললেন, “দেখেছি, কিন্তু বনের ওপার থেকে এপারে টেনে আনতে হবে আমাকে ওই সূর্যের রথ, এসে তুমিও”, বলেই কুঁকড়ো নানা ভঙ্গিতে যেন সূর্যের রথ টেনে ক্রমে পিছিয়ে চললেন, “তফাত হো তফাত হো” বলতে বলতে। সোনালিয়া বলতে লাগল, “আসছেন আসছেন”, কুঁকড়ো। হাপাতে হাপাতে বললেন, “ওপার থেকে এল রথ।” ঠিক সেই সময়ে শালবনের ওপার থেকে সূর্য উদয় হলেন সিন্দুর বরন। কুঁকড়ে মাটিতে বুক ঠেকিয়ে সূর্যের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে বললেন, “আঃ, আজকের সূর্য কত বড়ো দেখেছ!” সোনালির ইচ্ছে, কুঁকড়ে সূর্যের জয় দিয়ে একবার গান করেন। কিন্তু গলার সব মুর খালি করে তিনি আজ সকালটি এনেছেন আর তাঁর সাধ্য নাইগাইতে। যেমন এই কথা সোনালিকে কুঁকড়ো বলেছেন, অমনি দূরে দূরে সব মোরগ ডেকে উঠল “উরু-উরু-রু-রু-রু”। কুঁকড়ো শুকনোমুখে বললেন, “আমি নেই-বাজয় দিলেম, শুনছ দিকে দিকে ওরাসব তুরী বাজিয়ের্তার উদয় ঘোষণা করছে।” সোনালি শুধলে, “সূর্য উঠলে পর তুমি কি কোনোদিনই তার জয়-জয়কার দাও না? তোমার নবতখানায় সোনার রৌশনচোঁকি সূর্যের জয় দিয়ে কি কোনোদিন বাজাও নি।”

 “একটি দিনও নয়” বলে কুঁকড়ো চুপ করলেন। সোনালি একটু ঠেস দিয়ে বললে, “সূর্য তো তা হলে ভাবতে পারেন অন্য সব মোরগের তাকে উঠিয়ে আনে।” কুঁকড়ো বললেন, “তাতেই-বা কী এল গেল।” সোনালি আরো কী বলতে যাচ্ছে, কুঁকড়ো তাকে কাছে ডেকে বললেন, “আমি তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি, তুমি আমার কাছে আজ না দাড়ালে সকালের ছবিটা কখনোই এমন উৎরতো না।” সোনালি কুঁকড়োর কাছে এসে বললে, “তুমি যে সকালটা করতে সূর্যের রথ বনের ওধার থেকে টেনে আনতে এত কষ্ট করলে তাতে তোমার লাভটা কী হল।” কুঁকড়ে বললেন, “পাহাড়ের নীচে থেকে ঘুমের পরে জেগে ওঠার যে সাড়াগুলি আমার কাছে এসে পেচচ্ছে, এইটেই আমার পরম লাভ” সোনালি সত্যিই শুনলে, নীচে থেকে