পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আলোর ফুলকি
৬৭

আওর এক লাথ তুগুমে, বাহবা বাজখ, খুব লড়ত, ইয়েঃ এক ঘা, উয়োঃ দো ঘাও, মারা মারা।” রাজ্যের পাখির গালাগালি হাসি টিটকিরির মধ্যে কুঁকড়ো এক-এক পা করে ক্রমে মরবার দিকে এগিয়ে চলেছেন। তার বুক বেয়ে রক্ত পড়ছে, গায়ের পালক সব ছিড়েখুড়ে চারি দিকে উড়ছে, চোখ ঝাপসা হয়ে এসেছে, মনে হচ্ছে পৃথিবী যেন ঘুরছে কিন্তু তবু তিনি যুঝছেন। কিন্তু শক্তি ক্রমেই কমছে। এই সময় তার মোরগ-ফুলের উপরে বাজখ। এমন এক ঘা বসিয়ে দিলে যে কুঁকড়ো অসান হয়ে বসে পড়লেন। অমনি চারি দিকে সবাই চেচিয়ে উঠল, “বাহবা কী বাহবা। ঘায়েল হুয়া, ঘায়েল হুয়া।”

 জিন্ম রাগে ফুলতে লাগল আর তার দুই চোখ দিয়ে দরদর করে জল পড়তে লাগল। কুঁকড়োর হুকুম, তার নড়বার জো নেই। কিন্তু সে তার বন্ধুর দুর্দশা আর দেখতে পারে না। সে ধমকে উঠল, “তোরা সব পাখি না মানুষ?” জিম্মা বলতে চায় যে মানুষ ছাড়া এমন নির্দয় আর কে হতে পারে। কিন্তু তার কথা জোগাল না; সে কেবল বলতে লাগলে, “ওরে, এরা পাখি, না মানুষ?” কুঁকড়ো যখন সান পেয়ে আবার চোখ মেললেন, তখন সব চুপচাপ রয়েছে, হায়দারি মোরগ বেড়ায় ঠেস দিয়ে হাপাচ্ছে, জিন্ম কেবল কাছে দাড়িয়ে; আর দূরে, সব পাখির দলের থেকে দূরে, ডানায় মুখ ঢেকে রয়েছে সোনালিয়া।

 কুঁকড়ো জিম্মাকে বলছেন, “এই শেষ, নাযন্ত্রণার আরো কিছু রেখেছে পোশাকী পাখি আর তাদের দলবলের” এমন সময় দেখা গেল, সব পাখি পা টিপে টিপে কুঁকড়ো যেখানে পড়ে রয়েছে সেই দিকে দল বেঁধে এগিয়ে আসছে; সবার মুখ শুকনো, যেন কী-একটা ভয়ে সবাই জড়োসড়ো, কেউ আর হাসছে না।

 কুঁকড়ো বললেন, “আ:জিন্ম, দেখো দেখে ওরা আমায় ভালোবাসে কি না দেখো। আহ সবার মুখ শুকিয়ে গেছে। এরা যদি শক্র তবে আর মিত্র কে। আজ আমার ভুল ভাঙল, এখন সবাই আমায় ভালোবাসে জেনে সুখে মরতে পারব।”

 জিন্মাও একটু অবাক হয়ে গেল, এই যারা ‘মার মার' ক'রে কুঁকড়োকে গাল পাড়ছিল, তারাই আবার হঠাৎ বন্ধু হয়ে উঠল এমন যে কেঁদেই অস্থির। কুকুর ঘাড় নেড়ে ভালো ক’রে পাখিদের দিকে চাইলে; দেখলে, সবাই ভয়ে ভ.জিাকাশের দিকে এক-একবার চাচ্ছে