পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আলোর ফুলকি
৭৯

 কুঁকড়োর কথায় সোনালির অভিমান বাড়ল বৈ কমল না। সে ঝগড়া করতে লাগল। কান্নাকাটি ক'রে ক’রে পাড়া জাগিয়ে তোলবার জোগাড় করলে। কুঁকড়োও একটু যে চটেন নি তা নয়। শেষ সোনালি বললে, “আচ্ছা আমার যদি মান রাখতে চাও, তবে কাল সকালে একেবারে গাইবে না বলে।”

 কুঁকড়ো বললেন, “এ কী কথা। সমস্ত পাহাড়তলিটা যে অন্ধকার হয়ে থাকবে।” সোনালি ঠোঁট ফুলিয়ে বললে, “না-হয় থাকলই। তোমারই-বা কী, আমারই-বা কী।” কুঁকড়ো ঘাড় নাড়লেন, “তা হতে পারে না। একদিন আলো বন্ধ! সব যে ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাকে গাইতেই হবে।”

 সোনালি বললে, “আচ্ছ, যদি প্রমাণ করে দিই, তুমি না থাকলেও সকাল হতে কিছু বাধল না, তখন?”

 কুঁকড়ো একটু হেসে বললেন, “তখন সোনালি আমি সেখান থেকে তোমার সঙ্গে ঝগড়াও করতে আসব না, আর আলোহল কি না হল সে খবরও জানতে খুব উৎসাহ করব না। কেননা যেদিন আমি-ছাড়া হয়ে আলো উঠবে, সেদিন আমি তো আর কুঁকড়ো নেই, আমি যে আলোর আলোয় গিয়ে মিশেছি।”

 সোনালির চোখে জল ভরে উঠলে সে কেঁদে বললে, “একটি দিন আমার কথা রাখে।”

 কুঁকড়ো ঘাড় নাড়লেন, “না, হতে পারে না।”

 সোনালি বললে, “ভুলেও কি একদিন আমার কথা রাখতে নেই গা।”

 কুঁকড়ো বললেন,“ভুল হবারযোটি নেই। অমনি অন্ধকার বুকে চেপে বলে,ডাক আলো-কে।”

 সোনালি বলে উঠল, “অন্ধকার ওঁর বুকে চেপে ধরে? সব বাজে কথা। বলো-না বাপু গান গাও— সবাই তোমার তারিফ করবে ব’লে। গানের তো ওই ছিরি, এর জন্তে মিছে কথা কেন বাপু! তোমার গান শুনে তো বনের সবাই মোহিত হল। এখানকার বাবুই-পাখি, সেও তোমার চেয়ে গায় ভালো।” *

 কুঁকড়ো বললেন, “হতে পারে বাবুই গায় চমৎকার, কিন্তু সেইজন্তে অভিমানে আমি গাওয়া বন্ধ করব, তেমন কুঁকড়ে আমায় ভাবলে নাকি।” সোনালি রেগেই বলে চলল,