পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৯
আলোর ফুলকি

উঠল, “যেমন আমাকে ঠেলে গেলেন, তেমনি পড়েন পাখ্‌মারের পাল্লায় তো ডানাদুটি কেটে ছেড়ে দেয়।”

 জিম্মা চুপটি ক’রে বসে সোনালির রকম-সকম দেখছে, এমন সময় কাঠঠোকরা নিজের কোটর থেকে মুখ ঝুঁকিয়ে ব’লে উঠল, “পাখ্‌মারটা কুঁকড়োকে তাগ করছে যে। কী বিপদ।” পেচার অমনি গাছের উপর থেকে দুয়ো দিয়ে বললে, “বেশ হয়েছে, খুব হয়েছে, কুঁকড়োর এবারে কর্ম কাবার।” খরগোসগুলো গড় থেকে ছুটে বেরিয়ে এল, একটা বাচ্ছা কান খাড়া ক’রে দেখে বললে, “পাখ্‌মার বন্দুকটা মুচড়ে ভাঙলে যে।” আর একজন অমনি ব’লে উঠল, “না রে, গুলি ভরছে, দেখছিস না?”

 জিম্মার দিকে সোনালি, সোনালির দিকে জিম্মা অবাক হয়ে চেয়ে রইল। জিম্মী, বললে, “ওরা কি কুঁকড়োর ওপরেও গুলি চালাবে।”

 সোনালি বললে, “না। সোনালির দেখা যদি পায়,তবে সেইদিকেই বন্দুক ওঠাবে।” ব’লে সোনালি চলল। জিম্মা পথ আগলে বললে, “কোথায় যাও সোনালি।” “আমার যেটুকু করবার সেই কাজটুকু করতে।” ব’লে বন্দুকের মুখে সোনালি উড়ে পড়তে চলল।

 কাঠঠোকরা চেচিয়ে উঠল, “ফাঁদ। ফাঁদ। ফাদটা বঁচিয়ে সোনালি।” কিন্তু তার আগেই সোনালিকে দড়ির ফাঁদ নাগপাশের মতে জড়িয়ে ফেলেছে। “তারা তাঁকে প্রাণে মারবে।” ব’লে সোনালি ধুলোর উপরে সোনার পাখা লুটিয়ে কাদতে লাগল। তার সব অভিমান চুর হয়ে গিয়ে কান্নার সুরে মিনতি করতে লাগল কেবলি সকালের কাছে, “হিমে সব ভিজিয়ে দাও, বারুদ না জলুক, ভিজে ঘাসে শিকারীর পা পিছলে যাক অন্য দিকে। ওগো সকালের আলো, তুমি তোমার পাখিকে রক্ষে করো, যে-পাখি আঁধার দূর করে, আকাশের বাজকে ফিরিয়ে দেয়, সবার উপর থেকে। ওগো স্বপনপাখি, তুমি গেয়ে ওঠে, চুলে পড়ক দুরন্ত মানুষের চোখের পাতা, স্বপ্নের রাজ্যে সে ঘুমিয়ে থাক তার মৃত্যুবাণের পাশাপাশি।”

 স্বপনপাখি গেয়ে উঠল বন মাতিয়ে করুণ মুরে, “পিয়-পিয়, ও গোলাপের পিয়, ও আমাদের পিয়।” সোনালি দুখানি ডানা ধুলোর উপরে রেখে বললে, “আলো তোমার পাখিকে বাঁচাও,