এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভূমিকা

'আশাকানন' ১২৮৩ বঙ্গাব্দে (বেঙ্গল লাইব্রেরিতে জমা দেওয়ার তারিখ ৩০ মে ১৮৭৬) প্রকাশিত হইলেও ইহা যে তিন বৎসর পূর্বে ১২৮০ বঙ্গাব্দে (১৮৭৩) রচিত হইয়াছিল, প্রকাশক উমাকালী মুখোপাধ্যায় তাহার “বিজ্ঞাপনে” তাহা জ্ঞাপন করিয়াছেন। পৃষ্ঠা-সংখ্যা ছিল ১৭২। আখ্যাপত্রটি এইরূপ ছিল—

আশাকানন। [ সাঙ্গ-রূপক-কাব্য ] শ্রীহেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ও শ্রীউমাকালী মুখোপাধ্যায় কর্তৃক প্রকাশিত। কলিকাতা। রায় যন্ত্র, নং ১৭, ভবানীচরণ দত্তের লেন, শ্রীবাবুরাম সরকার দ্বারা মুদ্রিত। সন ১২৮৬ সাল।

এই allegorical কাব্যটি লিখিয়া, প্রকাশ করিতে হেমচন্দ্রের সঙ্কোচ ছিল। 'বীরবাহু’ কাব্যে তিনি স্বদেশ ও স্বজাতিকেই একটি কল্পিত কাহিনীর মধ্য দিয়া বড় করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন, কিন্তু তাঁহার কবিচিত্ত তাহাতে সম্পূর্ণ প্রসন্ন হয় নাই। তিনি মানবের কাব্য, জগতের কাব্য লিখিতে চাহিলেন। 'আশাকানন' সেই ইচ্ছার ফল। তবু তিনি স্বদেশকে সম্পূর্ণ ভুলিতে পারেন নাই, বাল্মীকির সাক্ষাতে দেশমাতার দুঃখ নিবেদন করিয়াছেন।

শশাঙ্কমোহন সেন 'বঙ্গবাণী' গ্রন্থের (১৯১৫) দ্বিতীয় খণ্ডে (পৃ. ৭-৯) এবং শ্রীমন্মথনাথ ঘোষ 'হেমচন্দ্র' পুস্তকের (১৩২৭) দ্বিতীয় খণ্ডে (পৃ. ৪৪-৫৬) 'আশাকাননে'র বিস্তৃত সমালোচনা করিয়াছেন।

স্বতন্ত্র পুস্তকাকারে 'আশাকাননে'র প্রথম সংস্করণ মাত্র দেখিয়ছি। গ্রন্থকারের জীবিতকালে প্রকাশিত গ্রন্থাবলীভুক্ত 'আশাকাননে'র সহিত প্রথম সংস্করণের পাঠ মিলাইয়া আমাদের পাঠ প্রস্তুত করা হইয়াছে।