এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
হেমচন্দ্র-গ্রন্থাবলী

নব জলধর নিরখে যেমন
চাতক উৎসুক মন;
অথবা যেমন ধনাঢ্য-আগারে
দুঃখী হেরে ধনরাশি;
সুখে নিরন্তর নিরখি তেমতি
আনন্দ-বাম্পেতে ভাসি।
পাইয়া সুযোগ গিয়া কাছে তার
বিনয়ে জিজ্ঞাসা করি,
কিরূপে এরূপে থাকে সে সেখানে
এক ধ্যান চিত্তে ধরি,
কি সুখে উম্মাদে লৈয়ে করে সেবা,
সহে নিত্য এত ক্লেশ,
কেন সে মণ্ডপে জাগ্রত সতত
থাকিতে এতেক দেশ।
সম্বদ্ধ বীণাতে পড়িলে যেমন
সহসা কাহার কর,
আপন হইতে উঠে সে বাজিয়া
নিঃসারি মধুর স্বর;
সেইরূপ ভাব কহে সেই জন
জ্যোৎস্না যেন মুখে ফুটে,
কি সুখ-সম্ভোগ করে সে সতত
কি আনন্দ প্রাণে উঠে;
কহে সে “কেমনে বুঝাব তোমায়
কিবা যে আনন্দে থাকি,
এ লতা-মণ্ডপে বসিয়া ইহাঁরে
কেন এ যতনে রাখি;
প্রণয়ী যে নয় কেমনে বুঝিবে
প্রণয়ের কিবা প্রথা;
মরু কি জানিবে স্রোতধারা কিবা
মধুময় তরুলতা!