পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশুতোষ-স্মৃতিকথা وما مه R কান-কথা একেবারেই শুনিতেন না। দুই একজন দেশমান্য লোক আমার জানা আছে, তঁহাদের চরিত্র ধর্ম্মজ্ঞান, সরলতা প্রভৃতি গুণ-মণ্ডিত, কিন্তু তঁাহারা প্রকায় বিচলিত অতিরিক্ত মাত্রায় পরের কথা শুনিয়া লোকের প্রতি বিচার হইতেন না। করেন। কে পশ্চাৎ হইতে কি বলিল, অভিযুক্ত ব্যক্তির তাহা জানিবার কোন উপায় নাই, অথচ তাহার প্রতি সেই উচ্চ পদস্থ ব্যক্তির মনোভাব ঋতু-ভেদে প্রাকৃতিক দৃশ্যের ন্যায় ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্ত্তিত হইতেছে। এই দেখা যাইতেছে আকাশ পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন, নির্ম্মল ও রৌদ্রোজিল, পরীক্ষণেই কে যেন তাহাতে কতকগুলি কালি ঢালিয়া দিয়াছে। তিনি মুখভার করিয়া বসিয়া আছেন, তাহাতে বিরক্তির ভাব অতি মাত্রায় ফুটিয়া উঠিয়াছে— সেই দুর্ভাগ্য বুঝিতে পারিল না, কি দোষে তাহার আশ্রয় দাতা অথবা চিরসুহৃদের মন এমন বিরূপ হইয়াছে। র্যাহারা স্তাবকগণ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকেন, তাহারা আত্মপ্রশংসা শুনিয়া যেরূপ পরিতৃপ্ত হ’ন, তেমনি তঁহাদের মুখে অপরের সম্বন্ধে অতিরঞ্জিত ও অনেক সময় নিতান্ত অলীক কথা শুনিয়া সেইরূপ উত্তেজিত হ’ন। সেই মণ্ডলীর লোকেরা তাহার প্রকৃতি কয়েক দিনের মধ্যেই বুঝিয়া লয় এবং সময় ও সুবিধা অনুসারে বিষ ছড়াইতে থাকে,-তাহারা জানে যে, সে বিষের ক্রিয়া অব্যর্থ হইবে । এইরূপ বড় লোকের অব্যাবস্থিত ভাব অতি ভয়ঙ্কর, তঁহাদের প্রসন্নতার উপর কোন আস্থা স্থাপন করা যায় না। “ক্ষণে রুষ্টঃ ক্ষণে তুষ্টঃ রুষ্টস্তস্তুষ্টঃ ক্ষণে ক্ষণে । অব্যবস্থিতচিত্তস্য প্রসাদহপি ভয়ঙ্করাঃ ৷” এইরূপ ব্যক্তি যাহাদের দিকে চাহিয়া ভ্রকুঞ্চিত করেন, কর্ণভেদী অব্যর্থ বাণিক্ষেপীরা তঁহার নিন্দ যেখানে সেখানে গাইতে প্রশ্রয় পায়। এইরূপ ব্যক্তিদিগকে চরিত্র হিসাবে আশুবাবুর সঙ্গে এক পংক্তিতে স্থান দেওয়া যায় না। আশুবাবুর সেরূপ দোষ একেবারেই ছিল না, তাহার মন দৃঢ়তার বর্ম্মে আচ্ছাদিত ছিল, কর্ণভেদী বাণ সেখানে ব্যর্থ হইয়া যাইত। আমার নিজের সম্বন্ধে তাহার ব্যবহারে আমি যাহা প্রত্যক্ষ করিয়াছি, তাহাই লিখিতেছি । শনৈশ্চরের কৃপায় কোন কালেই আমার শত্রুর অভাব ছিল না। তাহারা একবার বলিল, আমি মদ খাইয়া মাথার পীড়া সৃষ্টি করিয়াছিলাম। কেহ বলিতেন,-আমার “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য” হরপ্রসাদ শাস্ত্রী লিখিয়া দিয়াছেন ও