পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rov আশুতোষ-স্মৃতিকথা তঁহাকে সুদীর্ঘ, বার পৃষ্ঠা-ব্যাপক একখানি পত্র লিখিয়াছিলেন। তখন আশুবাবু সবে মাত্র হাইকোটের প্রধান বিচার পতির পদ পাইয়াছেন। আশুবাবু আমাকে ডাকাইয়া আনিলেন এবং ঐ চিঠিখানি পড়িতে বলিলেন। আমি সমস্তটা পড়িলে পর তিনি বলিলেন,-“এখন কি করিব, বলুন।” আমি বলিলাম-“আপনি এখন প্রধান বিচারপতি, আপনি অন্যায় দেখিলে আমাকে যে আদেশ করিবেন, তাহা শিরোধার্য্য করিয়া লইতে। আমি বাধ্য।” উত্তরে তিনি যাহা বলিলেন, তাহাতে বুঝিলাম আশুতোষ সে পত্র-লেখকের উপর বিষম ক্রুদ্ধ হইয়াছেন। সেই পত্রে এমন কতকগুলি কথা ছিল, যাহা স্পষ্টতঃ ঘোর মিথ্যা এবং তিনি তাহা জানিতেন। তিনি আমার সমক্ষে টুকরা টুকরা করিয়া চিঠিখানি ছিড়িয়া ফেলিলেন। একজন তৃতীয় ব্যক্তির মুখে শুনিয়াছি, কোন মস্ত বড় পণ্ডিত আমার বই বিজ্ঞান-সঙ্গত নহে এবং তাহাতে অনেক ভুল আছে বলিতেছিলেন। আশুবাবু ভূত্যের দ্বারা আমার সমস্ত বই আনিয়া টেবিলের উপর রাখিলেন এবং বলিলেন-“এত বড় অমানুষী খাটুনী যে খাটিয়াছে, তাহার ভুল হইবে না, ভুল হইবে কি নিষ্কর্ম্মার ? কাজ করিতে গেলেই ভুল হয়। আর বিজ্ঞানসঙ্গত হয় নাই যে বলিলেন, এ কথাটা আমি ভাল বুঝিতে পারিলাম না । আমরা জানি, বিলাতেই তো বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে লেখার আদর হয় । সেখানে মহা মহা বিশ্ব-বিখ্যাত পণ্ডিতগণ দীনেশবাবুর বই গুলির এত অজস্র প্রশংসা করিয়াছেন যে, এ সকল কথা আপনার মত লোকের মুখে শোভা পায় না। অসমর্থ ও অযোগ্য ব্যক্তিদের ঈর্ষামূলক কথার উপর জোর দেওয়া আপনার মত লোকের উচিত নহে ।” এই যে আমার বিরুদ্ধে নানারূপ ষড়যন্ত্র চলিতেছিল, আশুবাবু আমার কাছে প্রায়ই তাহা বলিতেন না। তিনি যেমন পরের কথায় কান দিতেন না, তেমনই অপরের অসাক্ষাতে যাহা বলিয়াছে, তাহাও অন্যের কাছে বলিতেন না। সেই বিরাট পুরুষ এই সকল ক্ষুদ্র কথাবার্ত্তাকে অতি তুচ্ছ মনে করিতেন । যদি তঁাহার ঈষৎ প্রশ্রয় পাইত, তবে ষড়ান্ত্রীরা যে কিরূপ ঘোট পাকাইত, তাহা বর্ণনা করা অসম্ভব। শুধু দুই একদিন আমাকে বলিতেন, “আপনার বন্ধুরা আসিয়াছিলেন, তাহারা অনেক কথা বলিয়া গেলেন।” কিন্তু কি