পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহৎগুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য २** কি না।” কিন্তু এ কি আশ্চর্য্য, সম্পূর্ণ বিশ্বাস-সহকারে তিনি বলিলেন“পরিবেন।” এই একটি ব্যক্য মন্ত্র-শক্তির কাজ করিল,-আমার সমস্ত শক্তির উদ্বোধন করিয়া আমাকে কর্ম্মে নিরত করিল। আমি ভগবানকে ডাকিয়া বলিলাম—“প্রভু, আমি যেন এই বিশ্বাসের যোগ্য হইতে পারি।” এইরূপ প্রেরণাই প্রকৃত শক্তি-সঞ্চারিণী,-বৃহৎ আর্থিক পুরস্কার ও খেলাৎ অপেক্ষাও এই প্রেরণার শক্তি বেশী । যে কাজ করে, সে জানে অংশুবাবুর নিঃস্ব হস্তের এই দানের মূল্য কতা! বিশ্ববিদ্যালয়ে তঁহার সময়ে যে সমস্ত মহৎকার্য্য সম্পাদিত হইয়াছে, তাহা টাকা-কড়িতে হয় নাই, উচ্চ পদ-প্রাপ্তির লোভে হয় নাই,-সেই বিরাটু কার্য্য আশুবাবুর স্বল্পাক্ষর কথার প্রেরণায় হইয়াছে -যেমন অগ্নির সম্মুখবন্ত্রী হইলে বুঝা যায়, তাহার একটি ফুলিঙ্গও তুচ্ছ নহে,"-এই মহাকর্ম্মীর সংস্পর্শে আসিলে তেমনই বুঝা যাইত যে, তাহার মুখের একটি কথা এক তোড়া মোহর অপেক্ষাও অধিক শক্তিশালী । আশুতোষের ন্যায় গম্ভীর-প্রকৃতি, আটল হিমাদ্রিসম ব্যক্তি যে পরিহাস করিতে পারিতেন, এবং বাল-সুলভ তরলতার সহিত আমোদ-প্রমোদে যোগ দিতে পারিতেন, তাহা হয়ত অনেকেই মনে করিতে পরিবেন না। কিন্তু বাস্তবিক তঁহার প্রকৃতি মানুষের সহজ আনন্দ উপভোগের সীমার বাহিরে ছিল না । শ্যামাপ্রসাদ একটি ঘটনার উল্লেখ করিয়াছিলেন। অতি জীর্ণ ও মলিন বস্ত্র-পরিহিত একটি যুবক একদিন আশুতোষের সঙ্গে দেখা করিতে আসিয়া তঁহাকেই বলিল,-“মহাশয়, আশুবাবুর সঙ্গে আমি দেখা করিতে পারি ?” আশুবাবু বলিলেন,-“অবশ্যই পারেন। আপনি কি চান ?” যুবক বলিল,-“তাহা আপনার কাছে বলিতে চাই না। আপনি তঁহার সঙ্গে আমার দেখা করার একটা সুযোগ ঘটাইয়া দিন।” আশুবাবু নগ্নদেহে এবং চট-পায়ে ছিলেন,-সুতরাং যুবকটি তঁহাকে সেই দেশ-বিখ্যাত, কীর্ত্তিমান পুরুষ বলিয়া মনেই করিতে পারে নাই। আশুতোষ । বলিলেন,-“আপনি এইখানে বসুন, আমি আপনার সঙ্গে তঁাহার একটা দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ করাইয়া দিতে পারি কি না, দেখি।” আশুবাবু পরিহাস-রসিকতা pt