পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখিয়া তিনি উৎফুল্প হইলেন এবং বিদায় গ্রহণ করিয়া পাটনায় চলিয়া । গেলেন। হায়! কে জানিত সে বিদায় চিরবিদায় । । ኣ পাটনায় পৌঁছিয়া আশুবাবু অনন্যমন হইয়া ডুমরাওন-মোকৰ্দমা । চালাইতে লাগিলেন। ১৯শে মে, সোমবার দিন তিনি পাটনায় গেলেন, . বৃহস্পতিবার দিন তাহার মোটরের সোফার খাইবার জন্য । সাংঘাতিক পীড়া র্তাহাকে তাহার বাড়ীতে নিমন্ত্রণ করিল। এতবড় লোককে সামান্য সোফার খাওয়াইতে চাহিয়াছে। কিন্তু সে জানিত আশুবাবু তাহাকে প্রত্যাখান করিবেন না ; গ্রীতির আহবান যেখান হইতে যখনই আসিয়াছে, - কুটীর ও রাজপ্রসাদের ভেদ তখনই তাহার চক্ষে অন্তৰ্হিত হইয়াছে । চন্দ্র-কিরণ যেমন রাজপ্রসাদের শীর্ষ-দেশ উজ্জল করিয়া কুটীরের প্রতি কার্পণ্য করে না, আশুতোষের উদারতাও সেইরূপ সার্বজনীন ও সৌজন্যময় ছিল। সোফারের বাড়ীতে খাইয়া আসিয়া ২৩শে শুক্রবার তঁহার সামান্য জ্বর হইল, একটা কুচকি একটু ফুলিল,-ডাক্তার বলিলেন,-“ইহা প্লেগ নহে।” সেই কুচকি-ফোলা ও জ্বর কমিয়া গেল ; তিনি তলপেটে নিদারুণ বেদনা অনুভব করিতে লাগিলেন। পেটের দস্তুরমত অসুখ ও বমি হইতে লাগিল,- ডাক্তার বলিলেন,-“ইহা কলেরা নহে।” তবে কি ? রমাপ্রসাদ কলিকাতা হইতে লেডী মুখাৰ্জীকে ডাক্তার লইয়া আসিতে “তার” করিলেন। ডাঃ ব্রহ্মচারী যাইতে পারিলেন না ; ডাঃ পি, নন্দী যাইয়া দেখেন, রোগীর অবস্থা গুরুতর এবং জীবনের আশা নাই । শনিবার আমি ভবানীপুরে আসিয়া খবর লইয়া গিয়াছিলাম,- আশুবাবুর সামান্য একটু জ্বর হইয়াছে এবং কুচকি ফুলিয়াছে। পাটনা প্লেগের একটা চিহ্নিত কেন্দ্র—এই সংবাদে আমরা একটু আতঙ্কিত হইয়াছিলাম ; কিন্তু অব্যবহিত পরেই শুনিতে পাইলাম— কুচকি-ফোলা সারিয়া গিয়াছে। রবিবার শেষ রাত্রিতে আমার পুত্র অরুণ আমাকে ঘুম হইতে জাগাইয়া আশুবাবুর মৃত্যু-সংবাদ দিল। রেজিষ্ট্রার জ্ঞান ঘোষ আমাকে সমস্ত সহর হাওড়া সংবাদ দিলেন, তখনই আমাকে তঁহাদের সঙ্গে হাওড়া শ্রাতঃকালে সেখানে আসিবে। .