পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ry- । चांजरडाश-शडिक्शा আশুতোষ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক খানি পত্রদ্বারা এষ্টান্স হইতে এম, এ, পর্য্যন্ত সৰু, পরীক্ষাতেই বন্ধ-ভাষায় একটী পরীক্ষা লওয়া হউক এবং বাঙ্গালাভাষায় রচনার পরীক্ষা গৃহীত হউক এ প্রস্তাব করিয়া পাঠান। সে সময়ে এই প্রস্তাবটি উত্থাপিত হইল। অনেকেই প্রস্তাবটি উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। সাহেব ও তদুপক্ষীয় ব্যক্তিগণ বলিয়াছিলেন, “বাঙ্গালা কি একটা ভাষা! বাঙ্গালাভাষায় পাঠ্য পুস্তকের নিতান্ত অভাব। বাঙ্গালায় আবার পরীক্ষা!” পণ্ডিত মহাশয়গুণ ও মুসলমানগণ সকলেই এই প্রস্তাবেঃ বিরুদ্ধে মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন। আশুতোষ এ প্রস্তাবটি রক্ষা করিবার জন্য একঘণ্ট, কাল অনলবর্ষী বক্তৃতা করিয়াছিলেন।......এই প্রস্তাব দেশের পক্ষে, জাতির পক্ষে, কিরূপ কল্যাণকর তাহা ওজস্বিনী ভাষায় বিবৃত করিয়াছিলেন, কিন্তু একাদশ জন সভা ব্যতীত আর সকলেই এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়াছিলেন । আশুতোষ এই ভাবে প্রথম ভগ্নীমনোরথ হইয়াও হ’ন নাই । তিনি অনুকুল মুহূর্ত্তে: অপেক্ষায় রহিয়া বহুদিন পরে প্রবেশিকা পরীক্ষা হইতে এম, এ, পর্যন্ত বঙ্গভাষা গৃহীত হইবে এই ব্যবস্থা করিয়া দিয়া আমার হইয়া গিয়াছেন। তঁহার উৎসাহে বহু উৎকৃষ্ট গ্রন্থ প্রকাশিত হইয়া আজ বঙ্গ ভাষাকে সমৃদ্ধ করিয়া তুলিয়াছে। পূর্বে র্যাহারা মনে করিতেন যে “বঙ্গভাষা সেদিনের ভাষা’ আজ সকলেরই সেই মিথ্যা বিশ্বাস দূর হইয়াছে। সংস্কৃত হইতে প্রাকৃত এবং প্রাকৃত হইতেই বাঙ্গলা ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমোন্নতি, ইহাই হইতেছে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ঐতিহাসিক গবেষণার ফল। পূর্বে অনেকে মনে করিতেন যে সংস্কৃতই বঙ্গভাষার জননী, কিন্তু এখন আমরা দেখিতে পাইতেছি যে,-প্রাকৃত ভাষাই বাঙ্গালী ভাযার জননী। সংস্কৃত উহার জননী নহে। জনসাধারণের ব্যবহৃত শব্দ হইতে ভাষা বিবিধ রূপাস্তরের মধ্য দিয়া আসিয়া বর্ত্তমান অবস্থায় দাড়াইয়াছে। আশুতোষ বুঝিয়াছিলেন যে, যদি বঙ্গভাষার আদর বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়, তাহা रुक्षेल দেশ-মধ্যে সাহিত্য-সেবার প্রতি উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিগণেরও দৃষ্টি পড়িবে। নচেৎ অনাদৃত। বঙ্গভাষার প্রতি শিক্ষিত সমাজের কোনও আকর্ষণ থাকিবে না । আর বাল্যকাল ছাত্রগণ যদি বঙ্গভাষা শিক্ষা করিতে আরম্ভ করে, তাহা হইলে বাঙ্গলার এই অনুরাগ যৌবনে বৃদ্ধি পাইয়া তাহাদিগকে মাতৃভাষানুরাগী করিয়া তুলিবে, জননী বঙ্গভাষারও প্রকৃত উন্নতি হইবে। তঁহার এই ভবিষ্যৎ দৃষ্টি আজ সফল হইয়াছে। আজ দেশের সর্বত্র বঙ্গ-সাহিত্যের আদর। বাঙ্গলা সাহিত্যের ইতিহাস পড়িবার জন্য, বঙ্গ-কবির বাণী শুনিবার জন্য, বঙ্গ-রঙ্গালয়ে অভিনয় দেখিবার জন্য আজ সকলের প্রাণেই নবীন আকাজক্ষা জাগিয়া উঠিয়াছে। কবি গাহিয়াছিলেন,- “এ নহে কাহিনী এ নহে স্বপন আসিবে সেদিন আসিবে ।”