পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশ-পরিচয় পূর্বে লিখিত হইয়াছে, এই বংশের বিশেষ কৃতিত্ব এই যে, ইহারা যেমন সংস্কৃতে, তেমনি বাঙ্গলা সাহিত্য-ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছিলেন। বিশ্বনাথ শিশুকালে আহার-নিদ্রা ত্যাগ করিয়া কবির গান শুনিতেন। ইনি সানুই গ্রামস্থ বৰ্দ্ধমানের রাজপণ্ডিত সার্বভৌম চট্টোপাধ্যায়ের দৌহিত্র রামমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যা ব্রহ্মময়ীকে বিবাহ করেন। ব্রহ্মময়ীর জ্যেষ্ঠ ভগিনী শ্যামসুন্দরীর পৌত্র প্যারীমোহন কবিরত্ন এক সময়ে বঙ্গীয় কাব্য-সাহিত্যে ব্যঙ্গ-কবিতা লিখিয়া পরিচিত হইয়াছিলেন। তাহার কবিতার একটি নমুনা দিতেছি :- ‘ 5ा। लांछि ब्रांश, চোখে চশমা। ঢাকা, ভয়ানক ঢং জেগেছে বাঙ্গলাতে । দাড়ি রাখে লোকে হইলে মহারোগ, এদের দাড়ি রাখা কেবল কর্ম্মভোগ, কামান’র পয়সাটি পায় না নাপিতে । ফিলজফার যেন ভাবছেন ফিলজফি, নবাবী আমলের পুরাণ মৌলভী বাল্মীকি কিংবা বেদব্যাস কবি, নিমগ্ন আছেন থিওরী চিন্তাতে ৷ ” এই কবিতাটি রজনী সেনের বৈবাহিকের দাবী সম্বন্ধে “বেয়াই কুটুম্বিতাস্থলে, বেী দিব না। ব’লে, বেশী কথা বলা ভাল নয়”—গানটির প্রায় শতাব্দী পূর্বে লিখিত হইয়াছিল, কিন্তু দুয়েরই এক ছাচ, এক সুর ; মূলতান-রাগে গাহিলে দুইই একরূপ শুনায়। বিশ্বনাথের জীবন অতীব বৈচিত্র্যপূর্ণ। প্রথম জীবনে তঁহাকে কিছুদিন মুহুরীগিরি করিতে হইয়াছিল। কিছুকালের জন্য তিনি রংপুর নিমক-মহলে কাজ করিয়াছিলেন। পরে চব্বিশ পরগণার অন্তর্গত বাদায় বামুনঘাটার (কেহ কেহ বলেন পুকুরকাটার) দারোগাগিরি কাজে নিযুক্ত হইয়াছিলেন। এক সময়ে রংপুর যাইবার পথে দাসু্যদ্বারা আক্রান্ত হইয়া তিনি বিশেষরূপে লাঞ্ছিত হন ; দসু্যরা তাহার সমুদয় অর্থাদি লুণ্ঠন করিয়া লইয়াছিল।