পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশ-পরিচয় 9 বুঝিতেন, তঁহাকে সেই অল্প ‘ফি' দিতেও গৃহস্থের কষ্ট হইতেছে। এমনও ঘটনা ঘটিয়াছে যে, ঔষধের দাম ও র্তাহার ‘ফি’ সংগ্রহের জন্য গৃহস্থ পশ্চাৎ দ্বারা দিয়া একখানি গহনা লইয়া বাহির হইয়া গিয়াছেন, উহা বন্ধক দিয়া টাকা আনিবার ব্যাপার আীভাসে টের পাইয়া তিনি সে বাড়ীর ‘ফি’ গ্রহণ করেন নাই এবং নিজের ডিস্পেনসারী হইতে বিনামূল্যে ঔষধ যোগাইয়াছেন। এই সকল অবস্থা-দর্শনে তঁাহার স্বাভাবিক দয়া প্রবণ হৃদয়ে একটা কুণ্ঠার ভাব জাগিয়া উঠিত। আমাদের শাস্ত্রে ভিষকদের বৃত্তি একান্ত নিঃস্বার্থ হওয়ার বিধান আছে। কথিত আছে, বৈদ্যগণ যে অবধি জনহিতকর চিকিৎসা বৃত্তি দ্বারা অর্থ উপাৰ্জন করিতে আরম্ভ করিলেন, সেই অবধি তাহাদের আসন ব্রাহ্মণগণের পংক্তি হইতে নামিয়া গেল। সদব্রাহ্মণের পক্ষে চিকিৎসাবৃত্তি অর্থে পার্জনের ব্যবসায়ে পরিণত— — করিতে স্বতঃই একটা দ্বিধার ভাব মনে হওয়া আশ্চর্য্যের বিষয় নহে। এজন্য তিনি বলিতেন-ব্যবহারজীবীর এ সকল বালাই নাই। যাহারা আদালতে উপস্থিত হয়, তাহারা একটা জেদের বশবর্ত্তী হইয়া আসে ; ব্যবহারজীবীর অতিরিক্ত দাবী মিটাইতেও তাহারা কোন কুণ্ঠ বোধ করে না। অন্যান্য অর্থে পার্জনের বৃত্তিতেও এই বাধার ভাব মনে হইবার কারণ নাই। গঙ্গাপ্রসাদ চিকিৎসা করিতে যাইয়াও মাঝে মাঝে রহস্য প্রিয়তা দেখাইয়াছেন। একদিন তিনি কৌতুক করিয়া একটি অল্পবয়স্ক রোগীর গণ্ডে চপেটাঘাত করিয়াছিলেন ; সে যখন চীৎকার করিয়া কঁাদিতেছিল, তখন তিনি পকেট হইতে অস্ত্র বাহির করিয়া তাহার পৃষ্ঠের দুষ্ট ব্রণটি কাটিয়া ফেলিলেন, বালকের আর নূতন করিয়া কঁাদিতে হইল না, কিংবা হাত-পা ছোড়াৰ্ছড়ি করিতে হইল না। গঙ্গাপ্রসাদ অতি উন্নতমনা ছিলেন । তিনি অর্থে পার্জন করিয়াছিলেন যথেষ্ট, কিন্তু অর্থলোভ তাহার চরিত্রে ছিল না । তিনি নিজে ংস্কৃতে সুপণ্ডিত হরলাল চট্টোপাধ্যায়ের কন্যার পাণিগ্রহণ করিয়া অর্থলোভ হইতে গুণের আদর্শের প্রতিই অনুরাগ দেখাইয়াছিলেন। পরবত্তী কালে তৎপুত্র আশুতোষের বিবাহের একটি প্রস্তাব কোন বিশিষ্ট ধনীর গৃহ হইতে আসিয়াছিল। এই ধনী ব্যক্তি আশুতোষকে অর্থ-স্পাহা শূন্যতা