পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশ-পরিচয় সোনাকে স্বর্ণকার তাহার ইচ্ছামত গড়ন দিয়া অলঙ্কার তৈয়ারি করিয়া থাকে, সেইরূপ গঙ্গাপ্রসাদ তাহাকে গড়িয়া তুলিয়াছিলেন। ১৮৮৭ খৃষ্টাব্দে গঙ্গাপ্রসাদ একটা গুরুতর মনস্তাপে একরূপ ভাঙ্গিয়া পড়েন। তঁহার দ্বিতীয় পুত্র, আশুতোয্যের কনিষ্ঠভ্রাতা হেমন্তকুমার ১৮৬৬ বন্ধ খুষ্টাব্দে ১৬ই ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দে মৃত্যু-১৮৮৭ খৃষ্ট সংস্কৃত ও দর্শন-শাস্ত্রে ‘অনাস’ সহ বি-এ পাশ করেন। অকস্মাৎ জ্বর।রোগে আক্রান্ত হইয়া এই মেধাবী তরুণ যুবক ১৮৮৭ খৃষ্টাব্দে ১লা নভেম্বর বিংশ বর্ষ বয়সে প্রাণত্যাগ করেন । তদবধি গঙ্গাপ্রসাদের স্বাস্থ্যভঙ্গ হইল ; তিনি এই দুর্ঘটনার পরে মাত্র দুইটি বৎসর জীবিত ছিলেন। এই পুত্রের স্মৃতি-রক্ষার জন্য গঙ্গাপ্রসাদ ১৮৮৭ খৃষ্টাব্দের ৫ই নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্তে ২,৫০০২ টাকা প্রদান করেন, তদ্দ্বারা ‘হেমন্তকুমার-পদকে’র সৃষ্টি হইয়াছে। গঙ্গাপ্রসাদ হিন্দুধর্ম্মের প্রতি প্রগাঢ় বিশ্বাস-পরায়ণ ছিলেন ; তিনি পোষাক-পরিচ্ছদের আড়ম্বর পছন্দ করিতেন না, অধ্যয়ন-নিরত এবং সতত কর্ম্মশীল ছিলেন। ইহার চরিত্রে যে সকল গুণ কুঁড়ির মত দেখা গিয়াছিল, সেই গুণাবলী আশুতোষে পূর্ণ শতদল হইয়া বিকাশ পাইয়াছিল। যে সকল কারণে তিনি ভবানীপুরই তাহার কর্ম্মক্ষেত্র-স্বরূপ মনোনীত করিয়া লইয়াছিলেন, তাহা পূর্বেই উল্লিখিত হইয়াছে। ১৮৭২ খৃষ্টাব্দে তিনি ভবানীপুর রসারোডের উপর গৃহ নির্ম্মাণ করিয়া। ১লা বৈশাখ তথায় প্রবেশ করেন ; এই গৃহে তিনি একাদিক্রমে ১৭ বৎসর বাস করিয়াছিলেন। কিন্তু এই গৃহ-নির্ম্মাণের ৮ বৎসর পূর্বে আশুতোষ বৌবাজারের মলঙ্গা লেনের এক ভাড়াটিয়া বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। সেই সময় গঙ্গাপ্রসাদ মেডিক্যাল কলেজে পড়িতেছিলেন। র্তাহার মৃত্যুর ৩৪ বৎসর পূর্বে যে প্রতিকৃতি গৃহীত হইয়াছিল, তাহার প্রতিলিপি সর্বত্রই দৃষ্ট হইয়া থাকে। এই চিত্র লওয়ার সময় তাহার বয়স ছিল ৫২/৫৩ বৎসর ; তৎকালে র্তাহার হৃষ্টপুষ্ট, গৌরবময় মূর্ত্তি দেখিয়া মনে হয় না যে, তাহাতে মৃত্যুর কোনরূপ ছায়া পতিত হইয়াছিল। অনেক পরিবারেই বংশগত চেহারার সাদৃশ্য দেখা যায়, কিন্তু আশুবাবুদের