পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VOR আশুতোষ-স্মৃতিকথা পিতার সঙ্গে অতি প্রত্যুষে শয্যা ত্যাগ করিয়া আশুতোষ ভ্রমণে বহির্গ হইতেন। তখন পিতা উৎসাহী পুত্রকে ‘জ্ঞান, ধর্ম্ম-কত পুণ্য কাহিনী শুনাইতেন এবং সর্বপ্রকার সুশিক্ষার বীজ তাহার চিত্তে অঙ্কুরিত করিতে প্রয়াসী হইতেন। মহেন্দ্রবাবু লিখিয়াছেন—“ ‘রবিন্সন ক্রুসো” ও “গালিভাস টাভেলে'র সুদীর্ঘ অংশ আশুতোষ এই সময় পিতাকে মুখস্থ শুনাইতেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তাহাকে তাহার বাঙ্গলা অনুবাদ আবৃত্তি করিয়াও শুনাইতে হইত। দুই বৎসরের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করিয়া আশুতোষ একবারে হাই স্কুলে उठद्धि হইলেন । গঙ্গাপ্রসাদ তাহাকে বাড়ীতে পড়াইবার ব্যবস্থা করিয়া দিলেন । পিতা স্বয়ং তঁহাকে পড়াইতেন, তাহা ছাড়া যোগ্য গৃহ-শিক্ষক নিযুক্ত করিয়া তাহার শিক্ষার সুবন্দোবস্ত করিয়া দিলেন। অধ্যবসায়শীল পুত্র পিতার নিকট অধ্য বসায়ের যে প্রেরণা পাইলেন, তাহ উর্বর ক্ষেত্রে শস্যের বীজের ন্যায় তাহার শিক্ষার ক্ষেত্রে পূর্ণ ফসল। আনয়ন করিয়াছিল। বাল্যকাল হইতেই পুস্তক-পাঠের প্রতি র্তাহার লুব্ধ দৃষ্টি পড়িল এবং তাহার অদ্ভুত স্মরণ-শক্তির বলে তিনি সেই বয়সে যে বিদ্যা অর্জন করিলেন, তাহা পরিণত বয়সের ছাত্রের যোগ্য। তিনি ১৮৭৫ খৃষ্টাব্দে সাউথ সুবার্ব্বান স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীতে ভক্তি হইলেন ; তখন এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন স্বনামধন্য শিবনাথ শাস্ত্রী। কথিত আছে। আশুতোষ সেই সময়েই বীজগণিতের ন্যায় কঠিন বিষয়টিও কতকটা আয়ত্ত করিয়া ফেলিয়াছিলেন । আশুবাবু যদিও শৈশব হইতেই লেখাপড়ায় অতিরিক্ত পরিমাণে মনোযোগী ছিলেন এবং তীক্ষ মেধাবী ছাত্র বলিয়া খ্যাতিলাভ করিয়াছিলেন, তথাপি তিনি সেই বয়সে নিতান্ত শান্ত, শিষ্ট, ভাল ছেলে বলিয়া পরিচিত হন নাই। র্তাহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা হেমন্তকুমারের আকৃতি অতি সুশ্রী ছিল ; তিনি গৌরবর্ণ ও প্রিয়দর্শন ছিলেন। এইজন্য সকলেই এই ফুটফুটে ছেলেটিকে আদর করিত। এদিকে বাল্যকালে আশুবাবুর রোগা চেহারা, শ্যাম বর্ণ, মস্ত বড় একটা মাথা বালোর দুরত্বপণার লোকের তাদৃশ আদর আকর্ষণ করিতে পারে নাই। গৃহে ****ী কনিষ্ঠ সহোদরটিকে লইয়াই মাতাপিতার অজস্র সোহাগের বৃষ্টি হইত। নিজেকে উপেক্ষিত মনে করিয়া আশুতোষ নীরবে ক্রোধে এবং অভিমানে ধূমায়িত হইতে থাকিতেন। একদিনের একটা ঘটনায়