পাতা:ইংরেজ ডাকাত - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ৩৩ম সংখ্যা।

লওয়াই কর্তব্য। বেশ বুঝিতে পারিতেছি, এখনই এখানে উক্ত বিষয়ের সংবাদ আসিবে।” এই ভাবিয়া যত শীঘ্র পারি, প্রাতঃকৃত্যাদি সমাপন করিয়া যেমন আমার গৃহে প্রবেশ করিতেছি, অমনই দেখিলাম, একজন প্রহরী একখানি পত্রহস্তে দৌড়িয়া আসিতেছে। পত্রখানি পড়িলাম,—লালবাজার পুলিস হইতে আমাদিগের বড় সাহেব এই পত্রখানি লিখিয়াছেন। উহাতে লেখা আছে,—“এই পত্র পাঠমাত্র, ডিটেক‍্টিভের কর্ম্মচারী মাত্রই আমার নিকট আগমন করিবেন; যেন কিছুমাত্র বিলম্ব না হয়।”

 কাহার সাধ্য, এই পত্র পাঠ করিয়া গমনে বিলম্ব করে? সেই সময়ে কোন কর্ম্মচারী গাঢ় নিদ্রায় অভিভূত, কেহ বা নিদ্রিত নহেন, অথচ শয়ন করিয়া আছেন, কেহ বা উঠিয়াছেন মাত্র। কেহ বা স্নান করিতেছেন, কেহ বা স্নান করিয়া বসিয়াছেন; কেহ বা স্নান করিবার অভিলাষে তৈলমর্দন করিতেছেন। কেহ সেই সময়েই বাহির হইতে আগমন করিয়াছেন; কেহ বা বাহিরে গমন করিবার নিমিত্ত প্রস্তুত হইতেছেন। এইরূপ সময়ে বড় সাহেবের আদেশ-লিপি আসিয়া উপস্থিত হইল। যিনি নিদ্রিত ছিলেন, তাঁহার নিদ্রাভঙ্গ হইল; যিনি শুইয়াছিলেন, তিনি উঠিলেন। যিনি স্নান করিতেছিলেন, তাঁহার সে দিবস পূরা স্নান হইল না; যিনি তৈলমর্দ্দন করিতেছিলেন, তাহার তৈল মুছিতে হইল। এইরূপ যিনি যে অবস্থায় ছিলেন, তিনি সেই অবস্থাতেই আপন আপন পরিধেয় প্রভৃতি লইয়া বহির্গত হইলেন। আমরা সকলে একত্র হইয়া পুলিস আফিসে গিয়া উপস্থিত হইলাম।