—আসুন। আজ্ঞে হ্যাঁ।
—শিগ্গির চলো চক্কত্তি, মুচিদের আজ শেষ করে আসতি হবে। বড় সায়েব রেগে আগুন। আমারে ডেকে পাঠিয়েছিল।
—একটা কথা বলবো? রাগ করবেন?
—না। কি?
—দাগ শেষ।
—সে কি?
প্রসন্ন চক্রবর্তী ভাতের হাত ধুয়ে গামছা দিয়ে মুছে ঘরের কোণের টিনের ক্ষুদ্র পেঁটরাটা খুলে দাগ-নক্সার বই ও ম্যাপ বার করে হাত দিয়ে দেখিয়ে বললে —সাত পাখী জমি এই, দু পাখী জমি এই—আর এই দেড় পাখী—একুনে তিরিশ বিঘে সাত কাঠা।
রাজারাম প্রশংসমান দৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়ে বললেন—বাঃ, কবে করলে?
—রবিবার রাত দুপুরের পর।
—সঙ্গে কে ছিল?
—করিম লেঠেল আর আমি। পিন্ম্যান ছিল সয়ারাম বোষ্টম।
—রিপোর্ট কর নি কেন? আগে জানাতি হয় এ সব কথা। তাহলি বড় সায়েবের কাছে আমাকে মুখ খেতি হোত না। যাও—
—কিছু মনে করবেন না দেওয়ানজি। কেন বলি নি শুনুন, ভরসা পাই নি, ঠিক বলচি। রাহাতুনপুরির সেই ব্যাপারের পর আর কিছু—
—সে ভয় নেই। ম্যাজিষ্ট্রেট বদলে গিয়েচে। বড়সায়েব নিজে বললে আমাকে।
রাজারাম রায় বড়সাহেবকে কথাটা জানালেন না।
প্রসন্ন চক্রবর্তী আমীন যে কাজ একা করে এসেচে, তাতে দেওয়ান রাজারাম নিজেও কিছু ভাগ বসাতে চান, রিপোর্ট সেইভাবেই লিখছিলেন, প্রস চক্রবর্তীকে অবিশ্যি হাওয়া করে দিচ্ছিলেন একেবারে।