চান?
ফণি চকত্তি বললেন—আমরা কিছুই জানিনে। ঈশ্বর বোষ্টম সেখোগিরি করে, সে নিয়ে যাবে বলেচে। সে আসুক, বোসো। তাকে ডাকতি লোক গিয়েচে।
ফণি চক্কত্তির বড় মেয়ে বিনোদ এই সময়ে চালছোলাভাজা তেলনুন মেখে বাটিতে করে প্রত্যেককে দিয়ে গেল। তারপর নিয়ে এলো প্রত্যেকের জন্যে এক ঘটি করে জল। এঁর বাড়িতে সন্ধ্যের মজলিসে চালছোলাভাজার বাঁধা ব্যবস্থা। দা-কাটা তামাক অবারিত, রোজ দেড়সের আন্দাজ তামাক পোড়ে। ফণি চক্কত্তির চণ্ডীমণ্ডপের সান্ধ্য আতিথেয়তা এ গায়ে বিখ্যাত।
ঈশ্বর বোষ্টম এসে পৌঁছুলো। ভবানী তাকে বললেন—কোন্ পথ দিয়ে এঁদের নিয়ে যাবে গয়া কাশী?
ঈশ্বর গড় হয়ে প্রণাম করে বললে—আজ্ঞে তা যদিস্যাৎ জিজ্ঞেস করলেন, ভকে বলি, বর্ধমান ইস্তক বেশ যাবো। তারপর রাস্তা ধরে সোজা এজ্ঞে গয়া।
—বেশ। কি রাস্তা?
—এজ্ঞে ইংরেজি কথায় বলে গ্যাং ট্যাং রাস্তা। আমরা বলি অহিলো বাইয়ের রাস্তা।
—কতদিন ধরে সেথো-গিরি করচো?
—তা বিশ বছর। একা তো যাইনে, সেথোর দল আছে, বর্ধমান থেকে যায়, চাকদহ থেকে, উলো থেকে যায়। এক আছে ধীরচাঁদ বৈরিগী, বাড়ি হুগলী। এক আছে কুমুদিনী জেলে, বাড়ি হাজরা পাড়া, ঐ হুগলী জেলা।
রূপচাদ মুখুয্যে বললেন—কুমুদিনী জেলে, মেয়েমানুষ?
—এজ্ঞে হ্যাঁ। তিনি মেয়েমানুষ হলি কি হবে, কত পুরুষকে যে জব্দ করেচেন তা আর কি বলবো। রূপও তেমনি, জগদ্ধাত্রী পিরতিমে।
ভবানী বাঁড়ুয্যে বললেন—ও ঠিকই বলচে। বর্ধমান দিয়ে গিয়ে ওখানে শের শা’র বড় রাস্তা পাওয়া যায়। অহল্যাবাই-টাই বাজে, ওটা নবাব শের শা’র রাস্তা।