কখনো পরাতে পারেন নি ওকে... সামান্য জমানবীশের কাজে কিই বা উপার্জন। বায়ুভূত, নিরালম্ব কোন ভাসমান আত্মার মত তিনি বেড়িয়ে বেড়াচ্ছেন অন্ধকার জগতের পথে পথে-কোথায় রলি খোকা, কোথায় রলি নাতনী দুটি।
জ্যৈষ্ঠ মাসে আবার চন্দ্র চাটুয্যের চণ্ডীমণ্ডপে নালু পালের ব্রাহ্মণভোজন হচ্ছে। যারা তীর্থ থেকে ফিরেছে, সেই সব মহাভাগ্যবান লোককে আজ আবার নালু পাল ফলার করাবে।
জ্যৈষ্ঠ মাসের দুপুর।
নালু পাল গলায় কাপড় দিয়ে হাত জোড় করে দূরে দাড়িয়ে সব তদারক করচে। আম কাঁঠাল জড়ো করা হয়েছে ব্রাহ্মণভোজনের জন্যে।
সকলেই এসেচেন, ফণি চক্কত্তি, চন্দ্র চাটুয্যে, ঈশ্বর বোষ্টম, নীলমণি সমাদ্দার —নেই কেবল রূপচাঁদ মুখুয্যে। তিনি কাশীর পথে দেহ রেখেছেন, সে খবর ওঁরা চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন কিন্তু যতীন সে চিঠি পায় নি।
নীলমণি সমাদ্দারের কাছে চন্দ্র চাটুয্যে তীর্থভ্রমণের গল্প করছিলেন, গ্যাং ট্যাং রোডের এক জায়গায় কি ভাবে ডাকাতের হাতে পড়েছিলেন, গয়ালি পাণ্ডা কি অদ্ভুত উপায়ে তাদের খাতা থেকে তাঁর পিতামহ বিষ্ণুরাম চাটুয্যের নাম উদ্ধার করে তাঁকে শোনালে।
নীলমণি সমাদ্দার বললেন - চাঁদ কাকার কথা ভাবলি বড় কষ্ট হয়। পুণ্যি ছিল খুব, কাশীর পথে মারা গেলেন। কি হয়েছিল?
চন্দ্র চাটুয্যে বললেন—আমরা কিছু ধরতি পারি নি ভায়া। বিকারের ঘোর কেবলই বলতো-খোকা কোথায়? আমার খোকা কোথায়? খোকা, আমি তামাক খাবো—আহা, সেদিন যতীন শুনে ডুকরে কেঁদে উঠলো।
নীলমণি বললেন-যতীন বড় পিতৃভক্ত ছেলে।
—উভয়ে উভয়কে ভালো না বাসলি ভক্তি:পনি আসে না ভায়া। রূপচাঁদ কাকাও ছেলে বলতি অজ্ঞান। চিরভা কাল দেখে এসেচি।
লালু পাল খুব আয়োজন করেছিল, চিড়ে যেমন সরু, জ্যৈষ্ঠ মাসে ভালো
১২৯