আজ আপনি ওদের ঘরে শুতে পারতেন।
যাবো?
—যান। ওদের মনে কষ্ট হবে। একে তো খেয়ে এলাম আমরা দুজনে খোকাকে ওদের ঘাড়ে ফেলে। আবার এ ঘরে যদি আপনি থাকেন, তবে কি মনে করবে ওরা? আপনি চলে যান।
—তোমার পড়া তা হোলে আর হবে না। ঈশোপনিষদ আজ শেষ করব ভেবেছিলাম।
—চোদ্দর শ্লোকটা আজ বুঝিয়ে নেবো ভেবেছিলাম—হিরন্ময়ে পাত্রে সত্যস্থাপিহিত মূখং তৎ ত্বং পূষপাবৃণু সত্যধর্মায় দৃষ্টয়ে—
—হে পুষন্, অর্থাৎ সূর্যদেব, মুখের আবরণ সরাও, যাতে আমরা সত্যকে দর্শন করিতে পারি। সোলার পাত্র দিয়ে সতের মূখ আবৃত-তাই বলছে। বেদে সুর্যকে কবির জোতিস্বরূপ বলেচে। কবির স্বর্গীয় জ্যোতির স্বরূপ হচ্ছে সূর্যদেব।
—আমি আজ বসে বসে চোদ্দর এই শ্লোকটা পড়ি। নারদ ভক্তি ধবেন বলেছিলেন, কাল ধরাবেন। বসুন, আ বসুন—আপনাকে কতক্ষণ দেখি নি।
—বেশ। বসি।
—যদি আজ মরে যাই আপনি খোকাকে যত্ন কোরবেন?
—হুঁ।
—ওমা, একটা দুঃখের কথাও বলবেন না, শুধু একটু হুঁ-ও আবার কি? —তুমি আর আমি এই গাঁয়ের মাটিতে একটা বংশ তৈরী করে রেখে যাবে—আমি বেশ দেখতে পাচ্চি, এই আমাদের বাঁশবাগানের ভিটেতে পাঁচপুরুষ বাস করবে, ধানের গোলা করবে, লাঙল-খামার করবে, গরুর গোয়াল করবে।
তিলু স্বামীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। স্বামীর মুখের দিকে চেয়ে চেয়ে বললে—আপনারে ফেলে থাকতি চায় না আমার মন। মনভার মধ্যি
১৩৩