বড্ড কেমন করে। আপনার মন কেমন করে আমার জন্য? অবজানন্তি মাং মুঢ়া মানুষী তনুমাশ্রিতং, আপনি ভাবছেন আমি সামান্য মেয়েমানুষ? আপনি মুঢ় তাই এমনি ভাবছেন? কে জানেন আমি?
ভবানী তিলুর রঙ্গভঙ্গিমাখানো সুন্দর ডাগর চোখ দুটিতে চুম্বন করে ওর চুলের রাশ জোর করে মুঠো বেঁধে ধরে বললেন—তুমি হোলে দেবী, তোমাকে চিনতে আমার দেরি নেই। কি মোচার ঘণ্টই করো, কি কচুর শাকই রাঁধো -ঝালির পাক মুখে দেবার জো নেই, যেমন বর্ণ তেমনি গন্ধ, আকারোসদৃশ প্রাজ্ঞঃ —
তিলু রাগ দেখিয়ে স্বামীর কোল থেকে মাথা তুলে নিয়ে বললে—বিশ্বাসঘাতকং স্তং-আমার রান্না কচুর শাক খারাপ? এ পর্যন্ত কেউ
—ভুল সংস্কৃত হোল যে। কান মলা খাও, এর নাম ব্যাকরণ পড়া হচ্ছে, না? কি হবে ও কথাটা? কি বিভক্তি হবে?
—এখন আমি বলতে পাচ্চিনে। ঘুম আসছে। সারাদিনের খাটুনি গিয়েছে কেমন ধারা। অতগুলো লোকের চিঁড়ে একহাতে ঝেড়েচি, বেছেচি, ভিজিয়েচি। আম-কাঁটাল ছাড়িয়েছি।
—তুমি ঘুমোও, আমি ও ঘরে যাই।
বিলু নিলু স্বামীকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল। নিলু বললে-নাগর যে পথ ভুলে? কার মুখ দেখে আজ উঠিচি না জানি।
বিলু বললে—আপনাকে আজ ঘুমুতে দেবো না। সারারাত গল্প করবো। নিলু, কি বলিস?
—তার আর কথা? বলে-
কালো চোখের আঙরা
কেন রে মন ভোমরা।
কাঁটাল খাবেন তো খাজা দুটো কাঁটালই পেকেচে। দিদির জন্যি পাঠিয়ে দিই। আজ কি করবেন শুনি॥
নিলু বললে—দিদিকে বোজ রাত্তিরে পড়ান, আমাদের পড়ান না কেন?
১৩৪