—আমার ওপর রাগ করলে না তো, ও গয়া, শোননা ও গয়া, মাথা খাও, ও গয়া-
গয়া দুটতে ছুটতে হেঁকে বললেন, না। কি পাগল। এমন মানুষও থাকে?
মিনতির সুরে প্রসন্ন চক্কত্তি হেঁকে বললে—কাউকে বলে দিও না যেন, ও গয়া! মাইরি।...
দূর থেকে গয়া মেমের স্বর ভেসে এল-ভেজবেন না—বাড়ি যান-খুড়োমশাই-ভেজবেন না—বাড়ি যান-
বিলের শামুক আবার কতটুকু সুধা আশা করে চাঁদের কাছে?
ওই যথেষ্ট না?
রামকানাই কবিরাজ আশ্চর্য না হয়ে পারেন নি যে আজকাল নীলকুঠির লোকেরা তাঁকে কিছু বলে না।
আজ আবার গয়া মেম এসে তাঁকে দুধ দিয়ে গিয়েছে, এটা ওটা সেটা প্রায়ই নিয়ে আসে। রামকানাই দাম দিতে পারবেন না বলে আগে আগে নিজে না, এখন গয়া মেয়ে সম্পর্ক পাতিয়ে দেওয়ার পথটা সহজ ও সুগম করেছে। আবার লোকজন ডাকে কবিরাজকে। ঝিঙে, নাউ, দু’আনিটা সিকিটা (কচিৎ)—এই হোল দর্শনী ও পারিশ্রমিক।
নালু পালের স্ত্রী তুলসীর ছেলেপিলে হবে, পেটের মধ্যে বেদনা, কি কি অসুখ। হরিশ ডাক্তার দিনকতক দেখেছিল, রোগ সারেনি। লোকে বলেতোমার পয়সা আছে নালু, ভাললা কবিরাজ দেখাও-
রামকানাই কবিরাজ ভালোর দলে পড়েন না, কেননা তিনি গরীব। অর্থেই লোকে মান দেয়, সততা বা উৎকর্ষের নয়। রামকানাই যদি আজ হরিশ ভাক্তারের মত পালকিতে চেপে রুগী দেখতে বেরুতে, তবে হরিশ ভাজারে মত আট আনা ভিজিট তিনি অনায়াসেই নিতে পারতেন।
নালু পাল কি মনে ভেবে রামকানাই কবিরাজকে ডাক দিলে। রামকানাই
১৫৪