পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তারপর বলবো আপনাকে।

 —বেশ তো,যদি কেউ না নেয়, ও সম্পত্তি গরিবদুঃখীর সেবায় অর্পণ কর গে তোমার দাদার নামে, বৌদিদির নামে। তাঁদের আত্মার উন্নতি হবে, তৃপ্তি হবে এতে।


 সেই দিনেই বিকেলে হঠাৎ হলা পেকে এসে হাজির। দূর থেকে ডেকে বললে—ও বড়দি, খোকা কই?

 খোকাকে ডেকে তিলু বললে—ও কে রে?

 খোকা চেয়ে বললে—দাদা—

 —দাদা না রে মামা।

 —মামা।

 হলা পেকে দু’গাছা সোনার বালা নিয়ে পরাতে গেল খোকার হাতে, তিলু বললে—না দাদা, ও পরাতি দেবো না।

 —কেন দিদি?

 —উনি আগে মত না দিলি আমি পারিনে।

 —সেবারেও নিতি দ্যাও নি। এবার না নিলি মোর মনে কষ্ট হবে না দিদিমণি?

 —তা কি করব দাদা, ও সব তুমি আন কেন?

 —ইচ্ছে করে তাই আনি। খোকন, তোর মামাকে তুই ভালবাসিস?

 খোকা বিস্ময়ের দৃষ্টিতে হলা পেকের মুখের দিকে চেয়ে বললো—হাঁ।

 —কতখানি ভালোবাসিস্‌?

 —আক্‌খানা।

 একখানা ভালবাসিস্‌! বেশ তো।

 খোকা এবার হাত বাড়িয়ে হলা পেকের বালা দুটো দু’হাতে নিলে। হলা পেকে হাততালি দিয়ে বললে—ওই দ্যাখো, ও নিয়েচে। খোকামণি পরবে বালা, তুমি দেবা না, বুঝলে না?

২০৬